গত দুইদিন ধরে সিলেটে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমছে। তবে নদ-নদীগুলোর পানি খুব ধীরগতিতে নামছে। ভারতের বরাক নদের শাখা কুশিয়ারার পানিপ্রবাহ বেড়েছে। এতে জেলার কুশিয়ারা তীরবর্তী কয়েকটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় চারটি স্থানে কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে বিভিন্ন গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পাঁচটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে এই নদীর সিলেট পয়েন্টে পানির উচ্চতা কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৩৮ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০১ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ০৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে জেলার অন্য নদ-নদীর পানি আজ কিছুটা কমেছে।
সর্বশেষ খবর বাঙালনিউজ এর গুগল নিউজ চ্যানেলে
গত বুধবার সকাল থেকে জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন এলাকার বাঁধ ভেঙে ৮৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া বিয়ানীবাজার উপজেলায়ও কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে ও পানি উপচে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। এ ছাড়া একই নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জেও উপচে পড়ে চারটি গ্রাম ও ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলায় দেউলগ্রাম, গোবিন্দশ্রী, আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর, আলীনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
অপরদিকে সিলেট নগরের অভ্যন্তরেও বেশ কয়েকটি এলাকা এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। এর মধ্যে শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, মীরাবাজার, তালতলা, জামতলা, মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরি রাজবাড়িসহ বিভিন্ন পাড়া–মহল্লায় এখনো পানিবন্দী বাসিন্দারা।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে ২৫ দশমিক ৬ মিলিমিটার। আগামীকাল পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের সব উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। জেলায় ৬৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ২০৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ অবস্থান করছেন। বন্যাকবলিত বাসিন্দাদের জন্য ত্রাণসহায়তা অব্যাহত আছে।