কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কোথাও অবনতি আবার কোথাও উন্নতি হচ্ছে। এরই মধ্যে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি ছয়টি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বুধবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা ছয়টায় সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সর্বশেষ রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আজ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ০৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪২ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৪৩ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে পানি জমে সিলেট নগরেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নগরের শিবগঞ্জ, সোবহানীঘাট, যতরপুর, মীরাবাজার, শাহজালাল উপশহর, মেন্দিবাগ, শামীমাবাদ, মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরি রাজবাড়ি, তালতলা, জামতলা ও চৌকিদেখী এলাকাসহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা পানিবন্দী অবস্থায় আছেন।
অপরদিকে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ সবচেয়ে বেশি বন্যার কবলে পড়েছে। জকিগঞ্জের কয়েকটি জায়গায় কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ডুবছে গ্রামের পর গ্রাম। এছাড়াও জেলার সব কটি উপজেলায় প্লাবন দেখা দিয়েছে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্য বলছে জেলার ১৩টি উপজেলার ১ হাজার ১৯২টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৬৮৫ জন মানুষ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন ৮ হাজার ৯৫১ জন মানুষ।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ ছাড়া দুই দফা বন্যায় সব নদ-নদী ও হাওর এলাকা পানি ভর্তি থাকায় পানি কমছে ধীরে।