০৩:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ডুবেছে ১৩২৩টি গ্রাম

উজানের ঢলে সিলেটে পানিবন্দি প্রায় ৭ লাখ মানুষ

অতিবৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের চারটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

বুধবার (১৯ জুন) সকাল ৯টার রিপোর্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, টানা বৃষ্টিতে নদী ও ছড়া উপচে পানি নগরীতে প্রবেশ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সিলেট নগরীর ভেতরে অনেক বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগরের অভিজাত এলাকা শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজারসহ মহানগরের অধিকাংশ নিচু এলাকা বন্যা কবলিত।

জেলা প্রশাসন সূত্র জনায়, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সিলেট মহানগর ও জেলায় সাড়ে ৬ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে মহানগরে ২১টি ওয়ার্ডে প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় সময় কাটাচ্ছেন। এ ছাড়া মহানগর ও জেলার ১৩টি উপজেলায় ১ হাজার ৩২৩টি গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো। প্লাবিত এলাকাগুলোয় গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক কৃষিজমির ফসল তলিয়ে গেছে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার সকাল নয়টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯২ সেন্টিমিটার শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানির স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে সারি গোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ০৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বাকি সব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানিয়েছেন, সিলেটে ২৪ ঘন্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার ৬টা পর্যন্ত) ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি ৫৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৭২ ঘন্টা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এছাড়াও ভারী ঘর্ষণজনিত কারণে ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে বৃষ্টিপাত কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. ওমর সানি আকন জানিয়েছেন, বন্যায় সিলেট মহানগর ও জেলায় ১ হাজার ৩২৩টি গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। মোট ৬২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন ১৭ হাজার ২৮৫ জন মানুষ।

ডুবেছে ১৩২৩টি গ্রাম

উজানের ঢলে সিলেটে পানিবন্দি প্রায় ৭ লাখ মানুষ

প্রকাশিত: ১০:৩৯:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০২৪

অতিবৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের চারটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

বুধবার (১৯ জুন) সকাল ৯টার রিপোর্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, টানা বৃষ্টিতে নদী ও ছড়া উপচে পানি নগরীতে প্রবেশ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সিলেট নগরীর ভেতরে অনেক বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগরের অভিজাত এলাকা শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজারসহ মহানগরের অধিকাংশ নিচু এলাকা বন্যা কবলিত।

জেলা প্রশাসন সূত্র জনায়, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সিলেট মহানগর ও জেলায় সাড়ে ৬ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে মহানগরে ২১টি ওয়ার্ডে প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় সময় কাটাচ্ছেন। এ ছাড়া মহানগর ও জেলার ১৩টি উপজেলায় ১ হাজার ৩২৩টি গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো। প্লাবিত এলাকাগুলোয় গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক কৃষিজমির ফসল তলিয়ে গেছে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার সকাল নয়টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯২ সেন্টিমিটার শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানির স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে সারি গোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ০৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বাকি সব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানিয়েছেন, সিলেটে ২৪ ঘন্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার ৬টা পর্যন্ত) ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি ৫৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৭২ ঘন্টা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এছাড়াও ভারী ঘর্ষণজনিত কারণে ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে বৃষ্টিপাত কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. ওমর সানি আকন জানিয়েছেন, বন্যায় সিলেট মহানগর ও জেলায় ১ হাজার ৩২৩টি গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। মোট ৬২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন ১৭ হাজার ২৮৫ জন মানুষ।