০১:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবকে উপাচার্যসহ ৫৮ জনের নামে মামলা হচ্ছে

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই অভিযোগে প্রাক্তন উপাচার্য ডা. মোর্শেদ অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার নঈমুল হকসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল রবিবার সিলেট আদালতে এ মামলা করা হবে।

সিলেট বিভাগীয় দুদক কার্যালয় সূত্র জানায়, তাদের একজন কর্মকর্তা মামলাটি দায়ের করবেন। এরপর তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে চার্জশিট গঠন করা হবে। প্রয়োজনে এই ৫৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।

অভিযোগ উঠেছে, ওই ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়স, কাজের অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা কিছুই মানা হয়নি। বয়সের সীমা না মেনে ৪৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা ছাড়া ১৮ জন, তৃতীয় বিভাগ পাওয়ার পরেও ৪ জন আর ভিন্ন ডিগ্রিধারী হওয়া সত্বেও নিয়োগ পান ২ জন। এছাড়াও অস্থায়ী নিয়োগ থেকেও কয়েকজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষদে বেআইনিভাবে আটজনকে ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

অভিযোগ আছে, উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী তার মেয়াদে ১০৯ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ( ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়া কোনো নিয়ম-নীতি না মেনে স্বজন প্রীতি করে দেওয়া হয়েছে এসব নিয়োগ। সংস্থাটির অনুসন্ধানে দেখা যায়, ১০৯টি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে। ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, স্বেচ্ছাচারীতার চরম চর্চায় দেওয়া এসব নিয়োগে মানা হয়নি কোনো শর্ত। দুদক বলছে, তাদের অনুসন্ধানেও নিয়োগ-দুর্নীতির প্রমান মিলেছে। যাতে সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ ৫৮ জন সরাসরি জড়িত।

জানা গেছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে ইউজিসির তদন্তে। ইউজিসির তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে, অস্থায়ীভাবে (অ্যাডহক) যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের মেয়াদ আর না বাড়ানো; অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়ার পরও নীতিমালা লঙ্ঘন করে যাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তা বাতিল করা এবং পদোন্নতির পর পাওয়া অতিরিক্ত বেতন-ভাতার অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দেওয়া।

২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠিত হয় স্নাতকোত্তর চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশের চতুর্থ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। ওই বছরের নভেম্বরে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী। আইন অনুযায়ী, ইউজিসির অনুমোদিত পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ভিসি ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অ্যাডহক ভিত্তিতে অতিরিক্ত নিয়োগ দেন।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিষয়টি নিয়ে ইউজিসি ও দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্তে নামে। তাদের প্রতিবেদনে অনিয়মের সত্যতা মেলায় ২০২২ সালের ২২ জুন দুদকের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী ও নঈমুল হক চৌধুরীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।

এ বিষয় সাবেক উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবকে উপাচার্যসহ ৫৮ জনের নামে মামলা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫০:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগে দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই অভিযোগে প্রাক্তন উপাচার্য ডা. মোর্শেদ অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার নঈমুল হকসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল রবিবার সিলেট আদালতে এ মামলা করা হবে।

সিলেট বিভাগীয় দুদক কার্যালয় সূত্র জানায়, তাদের একজন কর্মকর্তা মামলাটি দায়ের করবেন। এরপর তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে চার্জশিট গঠন করা হবে। প্রয়োজনে এই ৫৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।

অভিযোগ উঠেছে, ওই ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়স, কাজের অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা কিছুই মানা হয়নি। বয়সের সীমা না মেনে ৪৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা ছাড়া ১৮ জন, তৃতীয় বিভাগ পাওয়ার পরেও ৪ জন আর ভিন্ন ডিগ্রিধারী হওয়া সত্বেও নিয়োগ পান ২ জন। এছাড়াও অস্থায়ী নিয়োগ থেকেও কয়েকজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষদে বেআইনিভাবে আটজনকে ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

অভিযোগ আছে, উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী তার মেয়াদে ১০৯ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ( ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়া কোনো নিয়ম-নীতি না মেনে স্বজন প্রীতি করে দেওয়া হয়েছে এসব নিয়োগ। সংস্থাটির অনুসন্ধানে দেখা যায়, ১০৯টি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে। ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, স্বেচ্ছাচারীতার চরম চর্চায় দেওয়া এসব নিয়োগে মানা হয়নি কোনো শর্ত। দুদক বলছে, তাদের অনুসন্ধানেও নিয়োগ-দুর্নীতির প্রমান মিলেছে। যাতে সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ ৫৮ জন সরাসরি জড়িত।

জানা গেছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে ইউজিসির তদন্তে। ইউজিসির তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে, অস্থায়ীভাবে (অ্যাডহক) যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের মেয়াদ আর না বাড়ানো; অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়ার পরও নীতিমালা লঙ্ঘন করে যাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তা বাতিল করা এবং পদোন্নতির পর পাওয়া অতিরিক্ত বেতন-ভাতার অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দেওয়া।

২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠিত হয় স্নাতকোত্তর চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশের চতুর্থ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। ওই বছরের নভেম্বরে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী। আইন অনুযায়ী, ইউজিসির অনুমোদিত পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ভিসি ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অ্যাডহক ভিত্তিতে অতিরিক্ত নিয়োগ দেন।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিষয়টি নিয়ে ইউজিসি ও দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্তে নামে। তাদের প্রতিবেদনে অনিয়মের সত্যতা মেলায় ২০২২ সালের ২২ জুন দুদকের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী ও নঈমুল হক চৌধুরীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।

এ বিষয় সাবেক উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।