০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৭ বছর পর মন্ত্রী শূন্য আউলিয়ার শহর সিলেট-১

প্রবাদ আছে, সিলেট-১ আসন যার সরকার তার। মর্যাদাপূর্ণ এই আসনটিতে যে দলের প্রার্থী জয়ী হয়েছে; সেই দলই সরকার গঠন করেছে। স্বাধীনতার পর থেকেই এমনটি হয়ে আসছে। তাই এ আসনের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। ফলে সব সরকারেরই মন্ত্রী সভায় ঠাঁই হতো সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্যের। তবে, এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিগত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। নতুন মন্ত্রিসভায় নেই আব্দুল মোমেন। এতে করে প্রায় ২৭ বছরের মন্ত্রিত্ব হারালো সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসন।

গত ২৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি যেই দলের প্রার্থীই এই আসনে বিজয়ী হয়েছেন তার দল সরকার গঠন করেছে এবং তিনি মন্ত্রী হয়েছেন। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে সিলেট-১ আসন থেকে বিজয়ী সংসদ সদস্যকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি।

১৯৯১ সালে সিলেট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন খন্দকার আব্দুল মালিক। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী। হুমায়ূন রশীদকে আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত করে।

২০০১ সালে বিএনপি থেকে এ আসনে এমপি হন এম. সাইফুর রহমান। বিএনপি ও জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। এর আগে বিএনপি ১৯৯১ সালে সরকার গঠনের পরও সাইফুর রহমানকে টেকনোক্র্যাট অর্থমন্ত্রী করা হয়।

২০০৮ ও ২০১৪ সালে এই আসন থেকে নির্বাচিত হওয়া আবুল মাল আবদুল মুহিত টানা দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। সাইফুর রহমান, আবুল মাল আবদুল মুহিত ও শাহ এএমএস কিবরিয়ার কারণে দেশের রাজনীতিতে সিলেট মানেই অর্থমন্ত্রী এমন একটা ধারণা জন্ম গিয়েছিল।

এই তিনজন মিলে প্রায় ২৭ বছর দেশের অর্থমন্ত্রণালয় সামলেছেন। নির্বাচিত সরকারের পাশাপাশি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকাকালে সাইফুর রহমান অর্থমন্ত্রী এবং এরশাদ শামসানামলে মুহিত অর্থমন্ত্রণালয় এবং হুমায়ুন রশীদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আবুল মাল আবদুল মুহিত রাজনীতি থেকে অবসর নিলে তার ভাই ড. এ কে আব্দুল মোমেন সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে জয়ী মোমেনকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এবার আবার এ আসন থেকে মোমেন নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি তার।

দ্বাদশের মন্ত্রিসভায় সিলেট বিভাগ থেকে দুজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। মৌলভীবাজার-৪ থেকে নির্বাচিত মো. আব্দুস শহীদকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সিলেটের বিশ্বনাথের সামন্ত লাল সেন টেকনোক্র্যাট কোটায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্ব পেয়েছেন। আর সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত শফিকুর রহমান চৌধুরীকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।

২৭ বছর পর মন্ত্রী শূন্য আউলিয়ার শহর সিলেট-১

প্রকাশিত: ০৬:৫১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৪

প্রবাদ আছে, সিলেট-১ আসন যার সরকার তার। মর্যাদাপূর্ণ এই আসনটিতে যে দলের প্রার্থী জয়ী হয়েছে; সেই দলই সরকার গঠন করেছে। স্বাধীনতার পর থেকেই এমনটি হয়ে আসছে। তাই এ আসনের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। ফলে সব সরকারেরই মন্ত্রী সভায় ঠাঁই হতো সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্যের। তবে, এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিগত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। নতুন মন্ত্রিসভায় নেই আব্দুল মোমেন। এতে করে প্রায় ২৭ বছরের মন্ত্রিত্ব হারালো সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসন।

গত ২৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি যেই দলের প্রার্থীই এই আসনে বিজয়ী হয়েছেন তার দল সরকার গঠন করেছে এবং তিনি মন্ত্রী হয়েছেন। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে সিলেট-১ আসন থেকে বিজয়ী সংসদ সদস্যকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি।

১৯৯১ সালে সিলেট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন খন্দকার আব্দুল মালিক। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী। হুমায়ূন রশীদকে আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত করে।

২০০১ সালে বিএনপি থেকে এ আসনে এমপি হন এম. সাইফুর রহমান। বিএনপি ও জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। এর আগে বিএনপি ১৯৯১ সালে সরকার গঠনের পরও সাইফুর রহমানকে টেকনোক্র্যাট অর্থমন্ত্রী করা হয়।

২০০৮ ও ২০১৪ সালে এই আসন থেকে নির্বাচিত হওয়া আবুল মাল আবদুল মুহিত টানা দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। সাইফুর রহমান, আবুল মাল আবদুল মুহিত ও শাহ এএমএস কিবরিয়ার কারণে দেশের রাজনীতিতে সিলেট মানেই অর্থমন্ত্রী এমন একটা ধারণা জন্ম গিয়েছিল।

এই তিনজন মিলে প্রায় ২৭ বছর দেশের অর্থমন্ত্রণালয় সামলেছেন। নির্বাচিত সরকারের পাশাপাশি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকাকালে সাইফুর রহমান অর্থমন্ত্রী এবং এরশাদ শামসানামলে মুহিত অর্থমন্ত্রণালয় এবং হুমায়ুন রশীদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আবুল মাল আবদুল মুহিত রাজনীতি থেকে অবসর নিলে তার ভাই ড. এ কে আব্দুল মোমেন সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে জয়ী মোমেনকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এবার আবার এ আসন থেকে মোমেন নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি তার।

দ্বাদশের মন্ত্রিসভায় সিলেট বিভাগ থেকে দুজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। মৌলভীবাজার-৪ থেকে নির্বাচিত মো. আব্দুস শহীদকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সিলেটের বিশ্বনাথের সামন্ত লাল সেন টেকনোক্র্যাট কোটায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্ব পেয়েছেন। আর সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত শফিকুর রহমান চৌধুরীকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।