সিলেটের নদ-নদীর অবাধ পানি প্রবাহ নিশ্চিত করে বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনে কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন অষ্ট্রগ্রাম হাওরের মধ্য দিয়ে করা সড়ক ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, আধুনিকতার নামে অপরিকল্পিতভাবে হাওরে বাধ ও রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এই হাওরে বাধের কারণে হাওর ও মৎসসম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে হাওরের বাধের বেশ কিছু অংশ ভাঙা হবে।
আজ শনিবার সকালে সিলেট নগরের একটি কনভেনশন হলে ‘‘হাওরে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় স্টেকহোল্ডার্স কনসাল্টেশন ওয়ার্কশ ‘ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, হাওরের মাছ প্রকৃতির দান। প্রকৃতির বিরুদ্ধাচারণ করে মাছের প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট সময় না দিয়ে মানুষ ভোক্তা ও আহরণকারী হিসেবে অত্যন্ত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে।
যারা মাছ ধরছেন, তাঁদের ভ‚মিকা অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ পেশায় যাঁরা নিয়োজিত, তাঁদের প্রতি অনেক অন্যায় করা হয়েছে। যাঁরা সত্যিকারের মৎস্যজীবী তাঁদেরকে মূল্যায়ন করা হয়নি। এতদিন জলমহাল যাদের কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছে, তারা অতি মুনাফার লোভে মাছের ক্ষতি করেছে। এজন্য প্রকৃত মৎস্যজীবীদের স্বার্থ সংরক্ষণে দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষা করা অত্যন্ত দরকার। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আরো বলেন, মাছ ধরা পেশাকে আধুনিকায়ন করতে হবে, যাতে তাঁরা সম্মানের সাথে বাঁচতে পারেন।
ফরিদা আখতার আরও বলেন, হাওরে মাছের গতিপথে অপরিকল্পিত বাধ ও রাস্তা নির্মাণের ফলে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরে দেশীয় প্রজাতিগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। মাছের প্রজননকালীন মাছ ধরতে নিষিদ্ধের বিষয়ে হাওর অঞ্চলে বিলবোর্ড ও রেডিও-টেলিভিশনে এ সংক্রান্ত প্রচারণা চালানো যেতে পারে বলে মত দেন তিনি।
মৎস অধিদপ্তর সিলেট বিভাগ আয়োজনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এটিএম মোস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী।
কর্মশালায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মৎস্য অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদসহ হাওর অধ্যুষিত দেশের সাতটি জেলার জেলা প্রশাসক, তাঁদের প্রতিনিধি, বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মৎস বিভাগের কর্মকর্তা, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ এবং অংশীজনেরা, সাত জেলার মৎস্যচাষীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কর্মশালায় আগত মৎস সম্পদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন দাবির পাশাপাশি সমস্যার কথাও তুলে ধরেন।