দেশের মানুষ এখন একক উপনিবেশ শাসকের অধীনে রয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না এমন বিদেশি শক্তির প্রতিনিধি হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার এ দেশে কাজ করছে। তিনি বলেন, গ্যারান্টি হচ্ছে তারা (আ.লীগ সরকার) সেই সমস্ত দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে। সেই সমস্ত দেশ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। তারা আওয়ামী লীগ সরকারের মাধ্যমে এই অঞ্চলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করতে চায়।
মঙ্গলবার বিকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, বিশ্বের গণতন্ত্রকামী দেশগুলো বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। আর এই সরকারের পদত্যাগ ছাড়া বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। কেবলমাত্র একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি যিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নয় তার অধীনেই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাদের মন্ত্রী নেতাকর্মীরা এত কথা বলেন, কিন্তু অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললে তারা এত বিচলিত হয় কেন? তারা অস্থির হয়ে যান এক ভীতির মধ্যে পড়ে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের পরিণতি কী হয় এই ভয় থেকেই তারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে চান না।
তিনি বলেন, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গোয়েন্দা বাহিনী ব্যবহার করে, প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রের শক্তিকে ব্যবহার করছে তা প্রতিদিন সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষ এখন পরাধীন। আমরা এখন একক উপনিবেশ শাসকের অধীনে রয়েছি এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার কোনো শক্তির প্রতিনিধি হিসেবে এ দেশে কাজ করছে।
রিজভী বলেন, যারা এদেশে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় তারা এদেশের জনগণের ভালো-মন্দ বিচার করে না। এটা করে না বলেই বাংলাদেশের মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। কিন্তু অনেক দেশ বাংলাদেশের জনগণের ভালো-মন্দ এবং গণতন্ত্র চায়। গতকাল অস্ট্রেলিয়া থেকে বলা হয়েছে বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যে তাদের দেশ আপসহীন।
তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে কবরস্থ করেছে মাটি চাপা দিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন এরা বিশ্বাস করে না। এরা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে তামাশা করে। এদের অধীনে কখনো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমাদের সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরাই এই জুলুম-অত্যাচারের শিকার হচ্ছে না গণমাধ্যমকর্মীরা এবং নানান পেশার মানুষ সরকারের এই জুলুম-অত্যাচারের শিকার হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে হলে গণতন্ত্রের আন্দোলন আরো বেগবান করতে হবে।
২৪ ঘণ্টায় ২৫৫ জনের বেশি নেতাকর্মী আটক
রিজভী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের মোট ২৫৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মোট মামলা দায়ের হয়েছে ৭টি। মোট আসামি ৮৭০ জনের বেশি নেতাকর্মী। আহত হয়েছেন ৩৫ জনের বেশি নেতাকর্মী।