০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মা ও বোনের মৃত্যুতে হতাশায় ছিলেন সাদি মহম্মদ

ছবি: ইন্টারনেট

কিংবদন্তী রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক সাদি মহম্মদের মৃত্যুর পর নানা প্রশ্ন সামনে আসছে। রবীন্দ্রসংগীতের জন্য নিবেদিত প্রাণ মানুষটি কেন আত্মহত্যার পথ বেচে নিলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজছেন অনেকে।

একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নৃত্যশিল্পী ও সাদির পারিবারিক বন্ধু শামীম আরা নিপা বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই বিষণ্নতায় ভুগছিলেন, শিবলী আমাকে বলেছিল, তুই একটু আয়, আমরা সাদি ভাইকে একটু বোঝাতে চাই, তুই থাকলে সাদি ভাই কথা শোনে। এসেছিলাম, অনেকক্ষণ কথা হলো, কথা দিয়েছিল আর ডিপ্রেশনে যাবে না। তখন বলছিলাম, তুমি একজন চিকিৎসকের কাছে যাও, উত্তরে বলেছেন, না, আমারটা আমি বুঝব। তোমরা আমাকে নিয়ে ভেব না।’

শুধু তা–ই নয়, হতাশা-মনের কষ্টগুলো ভুলে থাকতে শিল্পীকে অনুষ্ঠান করারও পরামর্শ দেন নীপা। তিনি বলেন, বলেছি তুমি অনুষ্ঠানের মধ্যে ঢুকে যাও। তাহলে এই যে তোমার কষ্ট হচ্ছে, খালাম্মার জন্য বিভিন্ন কারণে, সেটা কেটে যাবে। বলেছেন, করবেন। আমি বললাম, তাহলে পয়লা বৈশাখেই করি, উত্তরে বললেন, না, আমি চৈত্রসংক্রান্তিতে করব।

আমি বললাম, তাহলে আমরা এর মধ্যে এসে তোমার সঙ্গে বসব, একটা অনুষ্ঠান করব। তারপর সবাই মিলে ওকে জড়ায়ে ধরলাম, শিবলী ধরল, নাসরিন ছিল ওর বোন, এত সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা হলো যে মনে হয়েছে ও আর ডিপ্রেশনে নেই। ও আমাদের এটাই বোঝাতে চাইল যে ও একদম স্বাভাবিক। তোমরা এ নিয়ে ভেব না। তোমরা যা বলবা তাই করব। সেই মানুষটা এমন একটা কাজ করবে, আমরা ভাবিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা যে ওর অনেক কষ্ট ছিল যে সেটাকে আমরা কমাতে পারিনি, এটা আমাদের জাতিগতভাবে ব্যর্থতা, ওর অভিমানটা থেকেই গেল। এ দেশকে সে অনেক দিয়েছে, পাওয়ার জায়গাটা অনেক কম ছিল।

গত বছরের জুলাইয়ে মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ এবং পরে মারা যান তার বোন। আপনজনদের পরপর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন এ শিল্পী। সংগীত জগতে পুরো জীবনটা উৎসর্গ করেও না পাওয়ার বেদনা ভীষণ কষ্ট দিত তাকে। জাগতিক নানা কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে বুধবার স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নেন অভিমানী এ শিল্পী।

মা ও বোনের মৃত্যুতে হতাশায় ছিলেন সাদি মহম্মদ

প্রকাশিত: ০২:৪৯:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

কিংবদন্তী রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক সাদি মহম্মদের মৃত্যুর পর নানা প্রশ্ন সামনে আসছে। রবীন্দ্রসংগীতের জন্য নিবেদিত প্রাণ মানুষটি কেন আত্মহত্যার পথ বেচে নিলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজছেন অনেকে।

একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নৃত্যশিল্পী ও সাদির পারিবারিক বন্ধু শামীম আরা নিপা বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই বিষণ্নতায় ভুগছিলেন, শিবলী আমাকে বলেছিল, তুই একটু আয়, আমরা সাদি ভাইকে একটু বোঝাতে চাই, তুই থাকলে সাদি ভাই কথা শোনে। এসেছিলাম, অনেকক্ষণ কথা হলো, কথা দিয়েছিল আর ডিপ্রেশনে যাবে না। তখন বলছিলাম, তুমি একজন চিকিৎসকের কাছে যাও, উত্তরে বলেছেন, না, আমারটা আমি বুঝব। তোমরা আমাকে নিয়ে ভেব না।’

শুধু তা–ই নয়, হতাশা-মনের কষ্টগুলো ভুলে থাকতে শিল্পীকে অনুষ্ঠান করারও পরামর্শ দেন নীপা। তিনি বলেন, বলেছি তুমি অনুষ্ঠানের মধ্যে ঢুকে যাও। তাহলে এই যে তোমার কষ্ট হচ্ছে, খালাম্মার জন্য বিভিন্ন কারণে, সেটা কেটে যাবে। বলেছেন, করবেন। আমি বললাম, তাহলে পয়লা বৈশাখেই করি, উত্তরে বললেন, না, আমি চৈত্রসংক্রান্তিতে করব।

আমি বললাম, তাহলে আমরা এর মধ্যে এসে তোমার সঙ্গে বসব, একটা অনুষ্ঠান করব। তারপর সবাই মিলে ওকে জড়ায়ে ধরলাম, শিবলী ধরল, নাসরিন ছিল ওর বোন, এত সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা হলো যে মনে হয়েছে ও আর ডিপ্রেশনে নেই। ও আমাদের এটাই বোঝাতে চাইল যে ও একদম স্বাভাবিক। তোমরা এ নিয়ে ভেব না। তোমরা যা বলবা তাই করব। সেই মানুষটা এমন একটা কাজ করবে, আমরা ভাবিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা যে ওর অনেক কষ্ট ছিল যে সেটাকে আমরা কমাতে পারিনি, এটা আমাদের জাতিগতভাবে ব্যর্থতা, ওর অভিমানটা থেকেই গেল। এ দেশকে সে অনেক দিয়েছে, পাওয়ার জায়গাটা অনেক কম ছিল।

গত বছরের জুলাইয়ে মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ এবং পরে মারা যান তার বোন। আপনজনদের পরপর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন এ শিল্পী। সংগীত জগতে পুরো জীবনটা উৎসর্গ করেও না পাওয়ার বেদনা ভীষণ কষ্ট দিত তাকে। জাগতিক নানা কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে বুধবার স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নেন অভিমানী এ শিল্পী।