০৫:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ

টস বিতর্কের পর বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন

নাটকীয়তায় ঠাঁসা হয়ে রইলো ‘অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৪’ এর ফাইনাল। ৯০ মিনিটের ম্যাচ ড্র হওয়ায় টাইব্রেকারের ২২ শটে মীমাংসা না আসায় টসের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তাতে জিতে সাফ নারী অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে ভারত। তবে বাইলজে টস না থাকায় সেটি বাতিল করে আবার টাইব্রেকার করার সিদ্ধান্ত নেন রেফারিরা। কিন্তু ভারত সেই সিদ্ধান্ত না মেনে মাঠ ছেড়ে চলে যায়। লম্বা সময়ের আলাপ-আলোচনা আর অপেক্ষা শেষে টস বিতর্কের ফল বাতিল করে বাংলাদেশ ও ভারতকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া ম্যাচের প্রথম থেকেই আক্রমণ করতে থাকে ভারত। ম্যাচের ৮ মিনিটেই সেই আক্রমণের ফল পায় সফরকারী দল। অধিনায়ক নিতু লিন্ডার পাস ধরে দ্রুত গতিতে বাংলাদেশের বক্সে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন শিবানি দেবি। এক গোলে পিছিয়ে গিয়েও আক্রমণ ধারালো করতে পারছিল না বাংলাদেশ।

একটা সময় মনে হচ্ছিল ১-০ গোলেই হারতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে অতিরিক্ত সময়ের চতুর্থ মিনিটে সাগরিকার গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচ সরাসরি গড়ায় টাইব্রেকারে। দুদলই প্রথম পাচ শটে গোল করে। পরের পাচ শটেও গোল হলে (১০-১০) দুই গোল কিপার শট নিতে যান। সেখানেও গোল করে দুজন। এতে ১১–১১ গোলে সমতা ছিল টাইব্রেকারে। যেহেতু দলের সব খেলোয়াড়ের টাইব্রেকারে কিক নেওয়া হয়ে যায় তাই কে চ্যাম্পিয়ন হবে সেটা নির্ধারণ করতে শ্রীলঙ্কান ম্যাচ কমিশনার ডি সিলভা জয়সুরিয়া রেফারিদের কয়েন টসের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণের সিদ্ধান্ত দেন। সেই টসে হেরে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার। আর জিতে যান ভারতের অধিনায়ক আনিকা দেভি শারুবাম। নাটকের বড় অংশ তখনও বাকি।

ম্যাচ রেফারির এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করে বাংলাদেশ। কারণ টুর্নামেন্টের বাইলজে টস ছিল না। বাইলজ অনুযায়ী, এই ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউট চলবে। সাডেন ডেথে হবে নিষ্পত্তি। বাংলাদেশের প্রতিবাদে শ্রীলঙ্কান ম্যাচ কমিশনার জয়সুরিয়া সিলভা ভুল স্বীকার করে নেন এবং নিয়ম অনুযায়ী টাইব্রেকার চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এর প্রতিবাদে প্রতিবাদে ভারত মাঠ ছেড়ে চলে যায়। তবে বাংলাদেশ দল শেষ পর্যন্ত মাঠে অবস্থান করে।

নিয়ম অনুযায়ী, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো এক দল এগিয়ে না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত শট নেওয়া চলতে থাকবে। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তেমনটা হয়নি। নেপালি রেফারি অঞ্জনা রায় টাইব্রেকার চলমান রাখতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঠিক তখন শ্রীলঙ্কার জয়সুরিয়া সিলভা রেফারিকে ডেকে এনে টস করার নির্দেশনা দেন।

বাংলাদেশ অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার ও ভারতের অধিনায়ক নিতু লিন্ডাকে ডেকেই রেফারি কিছু বোঝার আগে টস সেরে ফেলেন। যেখানে টস ভাগ্যে জিতে যায় ভারত। পরে বাংলাদেশের খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা প্রতিবাদ করলে বাইলজ ঘেটে রেফারিরা দেখেন, টসের নিয়ম নেই। টাইব্রেকার চলমান থাকবে। ফলে টস বাতিল করা হয়। তবে আগে একবার জয়ী ঘোষণা করায় ভারত খেলতে রাজী হয়নি। তারা মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যায়। বাংলাদেশ দল মাঠে অবস্থান করে সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করতে থাকে।

একবার শোনা যায়, ভারত দলকে মাঠে ফেরার জন্য ৩০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে তারা না এলে বাংলাদেশকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা হয়নি। ৯০ মিনিটের ম্যাচের পর প্রায় ২ ঘণ্টার নাটক আর বিতর্ক শেষে বাংলাদেশ ও ভারত, দুই দলকে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে।

ফাইনালের আগে আরও একবার ভারতের সঙ্গে দেখা হয় বাংলাদেশের। সেই ম্যাচেও একেবারে অন্তিমমুহূর্তে গোল করে বাংলাদেশকে ১-০ ব্যবধানে জয় উপহার দেন সাগরিকা। আজও সেই সাগরিকার গোলে খেলায় সমতা ফেরায় বাংলাদেশ। এরপর টাইব্রেকার, তারপর হয় নাটক।

সূত্র: সমকাল

বিষয়

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ

টস বিতর্কের পর বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন

প্রকাশিত: ১১:২১:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নাটকীয়তায় ঠাঁসা হয়ে রইলো ‘অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৪’ এর ফাইনাল। ৯০ মিনিটের ম্যাচ ড্র হওয়ায় টাইব্রেকারের ২২ শটে মীমাংসা না আসায় টসের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তাতে জিতে সাফ নারী অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে ভারত। তবে বাইলজে টস না থাকায় সেটি বাতিল করে আবার টাইব্রেকার করার সিদ্ধান্ত নেন রেফারিরা। কিন্তু ভারত সেই সিদ্ধান্ত না মেনে মাঠ ছেড়ে চলে যায়। লম্বা সময়ের আলাপ-আলোচনা আর অপেক্ষা শেষে টস বিতর্কের ফল বাতিল করে বাংলাদেশ ও ভারতকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া ম্যাচের প্রথম থেকেই আক্রমণ করতে থাকে ভারত। ম্যাচের ৮ মিনিটেই সেই আক্রমণের ফল পায় সফরকারী দল। অধিনায়ক নিতু লিন্ডার পাস ধরে দ্রুত গতিতে বাংলাদেশের বক্সে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন শিবানি দেবি। এক গোলে পিছিয়ে গিয়েও আক্রমণ ধারালো করতে পারছিল না বাংলাদেশ।

একটা সময় মনে হচ্ছিল ১-০ গোলেই হারতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে অতিরিক্ত সময়ের চতুর্থ মিনিটে সাগরিকার গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচ সরাসরি গড়ায় টাইব্রেকারে। দুদলই প্রথম পাচ শটে গোল করে। পরের পাচ শটেও গোল হলে (১০-১০) দুই গোল কিপার শট নিতে যান। সেখানেও গোল করে দুজন। এতে ১১–১১ গোলে সমতা ছিল টাইব্রেকারে। যেহেতু দলের সব খেলোয়াড়ের টাইব্রেকারে কিক নেওয়া হয়ে যায় তাই কে চ্যাম্পিয়ন হবে সেটা নির্ধারণ করতে শ্রীলঙ্কান ম্যাচ কমিশনার ডি সিলভা জয়সুরিয়া রেফারিদের কয়েন টসের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণের সিদ্ধান্ত দেন। সেই টসে হেরে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার। আর জিতে যান ভারতের অধিনায়ক আনিকা দেভি শারুবাম। নাটকের বড় অংশ তখনও বাকি।

ম্যাচ রেফারির এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করে বাংলাদেশ। কারণ টুর্নামেন্টের বাইলজে টস ছিল না। বাইলজ অনুযায়ী, এই ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউট চলবে। সাডেন ডেথে হবে নিষ্পত্তি। বাংলাদেশের প্রতিবাদে শ্রীলঙ্কান ম্যাচ কমিশনার জয়সুরিয়া সিলভা ভুল স্বীকার করে নেন এবং নিয়ম অনুযায়ী টাইব্রেকার চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এর প্রতিবাদে প্রতিবাদে ভারত মাঠ ছেড়ে চলে যায়। তবে বাংলাদেশ দল শেষ পর্যন্ত মাঠে অবস্থান করে।

নিয়ম অনুযায়ী, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো এক দল এগিয়ে না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত শট নেওয়া চলতে থাকবে। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তেমনটা হয়নি। নেপালি রেফারি অঞ্জনা রায় টাইব্রেকার চলমান রাখতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঠিক তখন শ্রীলঙ্কার জয়সুরিয়া সিলভা রেফারিকে ডেকে এনে টস করার নির্দেশনা দেন।

বাংলাদেশ অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার ও ভারতের অধিনায়ক নিতু লিন্ডাকে ডেকেই রেফারি কিছু বোঝার আগে টস সেরে ফেলেন। যেখানে টস ভাগ্যে জিতে যায় ভারত। পরে বাংলাদেশের খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা প্রতিবাদ করলে বাইলজ ঘেটে রেফারিরা দেখেন, টসের নিয়ম নেই। টাইব্রেকার চলমান থাকবে। ফলে টস বাতিল করা হয়। তবে আগে একবার জয়ী ঘোষণা করায় ভারত খেলতে রাজী হয়নি। তারা মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যায়। বাংলাদেশ দল মাঠে অবস্থান করে সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করতে থাকে।

একবার শোনা যায়, ভারত দলকে মাঠে ফেরার জন্য ৩০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে তারা না এলে বাংলাদেশকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা হয়নি। ৯০ মিনিটের ম্যাচের পর প্রায় ২ ঘণ্টার নাটক আর বিতর্ক শেষে বাংলাদেশ ও ভারত, দুই দলকে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে।

ফাইনালের আগে আরও একবার ভারতের সঙ্গে দেখা হয় বাংলাদেশের। সেই ম্যাচেও একেবারে অন্তিমমুহূর্তে গোল করে বাংলাদেশকে ১-০ ব্যবধানে জয় উপহার দেন সাগরিকা। আজও সেই সাগরিকার গোলে খেলায় সমতা ফেরায় বাংলাদেশ। এরপর টাইব্রেকার, তারপর হয় নাটক।

সূত্র: সমকাল