০৭:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সীতাকুণ্ডে পর্যটন স্পটে কেন এত পর্যটকের মৃত্যু হচ্ছে

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পর্যটন স্পটগুলোতে গত দুই মাসে পৃথক দুর্ঘটনায় ছয় পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন মারা গেছেন ঝরনায় পড়ে। আর তিনজনের মৃত্যু হয়েছে সাগরে সাঁতার কাটতে নেমে। সর্বশেষ গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বিলাসী ঝরনায় এ কে এম নাইমুল হাসান (২০) নামের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নাইমুল হাসানের লাশ উদ্ধার করেন।

আরও পড়ুন

ছবি তুলতে গিয়ে ঝরনার পানিতে ডুবে বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রের মৃত্যু

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বিলাসী ঝরনা

গত দুই মাসে যে ছয়জন মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে তিনজনেই আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ছাড়া একজন ছাড়া অন্য সবাই শিক্ষার্থী।

পূর্বে পাহাড় ও পশ্চিমে সাগরবেষ্টিত সীতাকুণ্ডে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে পাহাড়ি ঝরনা ও সমুদ্রে নামার সময় সতর্কতার অভাবে দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। পর্যটন স্পটগুলোতে নেই যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থাও।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ আগস্ট উপজেলার বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের ছোট দারোগাহাট এলাকায় সহস্রধারা-২ নামের ঝরনা থেকে নৌকাযোগে লবণাক্ষ্য হ্রদের ওপর ফিরছিলেন ঢাকার নিকুঞ্জ এলাকা থেকে আসা তিন পর্যটক। হ্রদটির প্রায় শেষ প্রান্তের কাছাকাছি এসে এক পর্যটক সাঁতার কেটে কূলে আসার ইচ্ছা পোষণ করে পানিতে নেমে পড়েন। তাঁর সঙ্গে সাঁতার কম জানা তাঁদের বন্ধু সোহানুর রহমানও সাঁতার কাটবেন বলে নৌকা থেকে ঝাঁপ দেন। কিছুক্ষণের মধ্যে গভীর পানিতে তলিয়ে যান সোহান। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। এর আগে ২৪ জুলাই উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকতে গোসলে নেমে সাঁতার কেটে উপকূল থেকে অনেক দূরে চলে যান আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী হাসান মারুফ ও এনায়েতুল্লাহ। পরে সেখানেই ঢেউ ও স্রোতের টানে তাঁদের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

হ্রদ আর ঝরনা দেখতে এক বছরে মিরসরাইয়ে ৩ লাখ পর্যটক

নাপিত্তাছড়া ঝরনায় যাওয়ার পথের দুই পাশ সবুজে ঢাকা। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় সম্প্রতি

ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল রাতভর অভিযান চালিয়ে সকালে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে। এর আগে ৫ জুলাই উপজেলার গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে গোসলে নেমে মেহেদী হাসান (১৬) নামের আরও এক কিশোর নিহত হয়। ২ জুলাই উপজেলার পন্থিছিলা ঝরঝরি ঝরনায় সেলফি তুলতে গিয়ে মো. আসিফ (২১) নামের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়।

যেসব কারণে এত দুর্ঘটনা

ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বন বিভাগ, পর্যটন স্পটের ইজারাদার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে দুর্ঘটনায় পর্যটকদের হতাহতের পাঁচটি কারণ জানা গেছে। যে পাঁচ কারণে এসব দুর্ঘটনা হচ্ছে, সেগুলো হলো পর্যটকদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস, পর্যটন স্পটে নিরাপত্তার অভাব, অভিভাবকদের উদাসীনতা, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা ও পর্যটন স্পটে মাদক গ্রহণ।

বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেন, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকতে দুর্ঘটনায় যে দুজন পর্যটক মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই দুই শিক্ষার্থী অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে গভীর সমুদ্রের দিকে চলে যাচ্ছিলেন। সেখানে অন্যরা তাঁদের গভীরে যেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা তা মানেননি। এখানকার উপকূলের ঢেউ ও স্রোত সম্পর্কে তাঁদের কোনো ধারণা ছিল না। ফলে তাঁদের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

বন পাহাড় ঝরনা বৃষ্টি ফেলে

বন পাহাড় ঝরনা বৃষ্টি ফেলে

উপজেলার বারৈয়ারঢালা জাতীয় উদ্যানের অধীন সীতাকুণ্ডের সহস্রধারা-২, মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া, নাপিত্তা ছড়া ঝরনাসহ অনেক ঝরনা রয়েছে, যেগুলো বন বিভাগ ইজারা দিয়েছে। এ ছাড়া সীতাকুণ্ডের বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কে সহস্রধারা-১ ও সুপ্ত ধারা নামের দুটি ঝরনা রয়েছে। ইকোপার্কটিও ইজারা দিয়েছে বন বিভাগ। এসব স্পটে ইজারাদারদের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানো হলেও পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নেই। পর্যটকদের নিরাপদ রাখারও ব্যবস্থা নেই।

বন বিভাগের বারৈয়ারঢালা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের ঝরনাগুলোতে সতর্কতামূলক অনেক সাইনবোর্ড আছে, কিন্তু পর্যটকেরা সেগুলো মানতে চান না। অনেক পর্যটক মাদকাসক্ত হয়ে আসেন অথবা পাহাড়ের ভেতরে এসে মাদকাসক্ত হন। তাঁদের অনেক জায়গায় যাওয়ার জন্য নিষেধ করলেও মানেন না। স্থানীয় গাইডও নেন না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।

কীভাবে পর্যটন স্পট নিরাপদ করা যায়

ফায়ার সার্ভিসের কুমিরা স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা ফিরোজ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা একদম সাঁতার জানেন না কিংবা কম সাঁতার জানেন, তাঁদের অবশ্যই পানিতে নামতে দেওয়া উচিত নয়। যেখানে বিপজ্জনক গর্ত কিংবা পানির গভীরতা বেশি, সেখানে অবশ্যই সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগাতে হবে। অথবা পর্যটন স্পটগুলোতে দায়িত্বশীল কারও উপস্থিতি থাকতে হবে। যে স্পটগুলো ইজারা দেওয়া আছে, সেখানে ইজারাদারের লোক বাড়াতে হবে। যেসব পর্যটন স্পটের অনুমোদন নেই, সেগুলো বন্ধ করতে হবে।

আরও পড়ুন

ঝরনা ও গিরিখাত দেখতে মিরসরাই এসে কেন পথ হারাচ্ছেন পর্যটকেরা

 চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নতুন পর্যটনকেন্দ্র মেলখুম গিরিখাত। প্রতিদিন এখানে ঘুরতে আসেন পর্যটকেরা। সম্প্রতি মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ এলাকায়

পর্যটন স্পটগুলোকে নিরাপদ করতে বন বিভাগ একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বলে জানিয়েছেন বারৈয়ারঢালা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ঝরনাগুলোতে যেন পর্যটকেরা না নেমে ঝরনার ওপরে উঠে চারপাশে ঘুরে ছবি তুলতে পারেন, সে জন্য একটি প্রকল্প তাঁরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। সেটি বাস্তবায়ন হলে দুর্ঘটনা কমে আসবে। এ ছাড়া পর্যটন স্পটে স্বেচ্ছাসেবক বাড়ানোর জন্যও ইজারাদারদের বলা হয়েছে।

বিষয়

সীতাকুণ্ডে পর্যটন স্পটে কেন এত পর্যটকের মৃত্যু হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:১৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পর্যটন স্পটগুলোতে গত দুই মাসে পৃথক দুর্ঘটনায় ছয় পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন মারা গেছেন ঝরনায় পড়ে। আর তিনজনের মৃত্যু হয়েছে সাগরে সাঁতার কাটতে নেমে। সর্বশেষ গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বিলাসী ঝরনায় এ কে এম নাইমুল হাসান (২০) নামের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নাইমুল হাসানের লাশ উদ্ধার করেন।

আরও পড়ুন

ছবি তুলতে গিয়ে ঝরনার পানিতে ডুবে বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রের মৃত্যু

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বিলাসী ঝরনা

গত দুই মাসে যে ছয়জন মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে তিনজনেই আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ছাড়া একজন ছাড়া অন্য সবাই শিক্ষার্থী।

পূর্বে পাহাড় ও পশ্চিমে সাগরবেষ্টিত সীতাকুণ্ডে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে পাহাড়ি ঝরনা ও সমুদ্রে নামার সময় সতর্কতার অভাবে দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। পর্যটন স্পটগুলোতে নেই যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থাও।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ আগস্ট উপজেলার বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের ছোট দারোগাহাট এলাকায় সহস্রধারা-২ নামের ঝরনা থেকে নৌকাযোগে লবণাক্ষ্য হ্রদের ওপর ফিরছিলেন ঢাকার নিকুঞ্জ এলাকা থেকে আসা তিন পর্যটক। হ্রদটির প্রায় শেষ প্রান্তের কাছাকাছি এসে এক পর্যটক সাঁতার কেটে কূলে আসার ইচ্ছা পোষণ করে পানিতে নেমে পড়েন। তাঁর সঙ্গে সাঁতার কম জানা তাঁদের বন্ধু সোহানুর রহমানও সাঁতার কাটবেন বলে নৌকা থেকে ঝাঁপ দেন। কিছুক্ষণের মধ্যে গভীর পানিতে তলিয়ে যান সোহান। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। এর আগে ২৪ জুলাই উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকতে গোসলে নেমে সাঁতার কেটে উপকূল থেকে অনেক দূরে চলে যান আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী হাসান মারুফ ও এনায়েতুল্লাহ। পরে সেখানেই ঢেউ ও স্রোতের টানে তাঁদের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

হ্রদ আর ঝরনা দেখতে এক বছরে মিরসরাইয়ে ৩ লাখ পর্যটক

নাপিত্তাছড়া ঝরনায় যাওয়ার পথের দুই পাশ সবুজে ঢাকা। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় সম্প্রতি

ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল রাতভর অভিযান চালিয়ে সকালে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে। এর আগে ৫ জুলাই উপজেলার গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে গোসলে নেমে মেহেদী হাসান (১৬) নামের আরও এক কিশোর নিহত হয়। ২ জুলাই উপজেলার পন্থিছিলা ঝরঝরি ঝরনায় সেলফি তুলতে গিয়ে মো. আসিফ (২১) নামের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়।

যেসব কারণে এত দুর্ঘটনা

ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বন বিভাগ, পর্যটন স্পটের ইজারাদার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে দুর্ঘটনায় পর্যটকদের হতাহতের পাঁচটি কারণ জানা গেছে। যে পাঁচ কারণে এসব দুর্ঘটনা হচ্ছে, সেগুলো হলো পর্যটকদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস, পর্যটন স্পটে নিরাপত্তার অভাব, অভিভাবকদের উদাসীনতা, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা ও পর্যটন স্পটে মাদক গ্রহণ।

বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেন, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকতে দুর্ঘটনায় যে দুজন পর্যটক মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই দুই শিক্ষার্থী অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে গভীর সমুদ্রের দিকে চলে যাচ্ছিলেন। সেখানে অন্যরা তাঁদের গভীরে যেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা তা মানেননি। এখানকার উপকূলের ঢেউ ও স্রোত সম্পর্কে তাঁদের কোনো ধারণা ছিল না। ফলে তাঁদের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

বন পাহাড় ঝরনা বৃষ্টি ফেলে

বন পাহাড় ঝরনা বৃষ্টি ফেলে

উপজেলার বারৈয়ারঢালা জাতীয় উদ্যানের অধীন সীতাকুণ্ডের সহস্রধারা-২, মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া, নাপিত্তা ছড়া ঝরনাসহ অনেক ঝরনা রয়েছে, যেগুলো বন বিভাগ ইজারা দিয়েছে। এ ছাড়া সীতাকুণ্ডের বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কে সহস্রধারা-১ ও সুপ্ত ধারা নামের দুটি ঝরনা রয়েছে। ইকোপার্কটিও ইজারা দিয়েছে বন বিভাগ। এসব স্পটে ইজারাদারদের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানো হলেও পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নেই। পর্যটকদের নিরাপদ রাখারও ব্যবস্থা নেই।

বন বিভাগের বারৈয়ারঢালা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের ঝরনাগুলোতে সতর্কতামূলক অনেক সাইনবোর্ড আছে, কিন্তু পর্যটকেরা সেগুলো মানতে চান না। অনেক পর্যটক মাদকাসক্ত হয়ে আসেন অথবা পাহাড়ের ভেতরে এসে মাদকাসক্ত হন। তাঁদের অনেক জায়গায় যাওয়ার জন্য নিষেধ করলেও মানেন না। স্থানীয় গাইডও নেন না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।

কীভাবে পর্যটন স্পট নিরাপদ করা যায়

ফায়ার সার্ভিসের কুমিরা স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা ফিরোজ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা একদম সাঁতার জানেন না কিংবা কম সাঁতার জানেন, তাঁদের অবশ্যই পানিতে নামতে দেওয়া উচিত নয়। যেখানে বিপজ্জনক গর্ত কিংবা পানির গভীরতা বেশি, সেখানে অবশ্যই সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগাতে হবে। অথবা পর্যটন স্পটগুলোতে দায়িত্বশীল কারও উপস্থিতি থাকতে হবে। যে স্পটগুলো ইজারা দেওয়া আছে, সেখানে ইজারাদারের লোক বাড়াতে হবে। যেসব পর্যটন স্পটের অনুমোদন নেই, সেগুলো বন্ধ করতে হবে।

আরও পড়ুন

ঝরনা ও গিরিখাত দেখতে মিরসরাই এসে কেন পথ হারাচ্ছেন পর্যটকেরা

 চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নতুন পর্যটনকেন্দ্র মেলখুম গিরিখাত। প্রতিদিন এখানে ঘুরতে আসেন পর্যটকেরা। সম্প্রতি মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ এলাকায়

পর্যটন স্পটগুলোকে নিরাপদ করতে বন বিভাগ একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বলে জানিয়েছেন বারৈয়ারঢালা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ঝরনাগুলোতে যেন পর্যটকেরা না নেমে ঝরনার ওপরে উঠে চারপাশে ঘুরে ছবি তুলতে পারেন, সে জন্য একটি প্রকল্প তাঁরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। সেটি বাস্তবায়ন হলে দুর্ঘটনা কমে আসবে। এ ছাড়া পর্যটন স্পটে স্বেচ্ছাসেবক বাড়ানোর জন্যও ইজারাদারদের বলা হয়েছে।