যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের ভোট শেষ হয়েছে। বুথ ফেরত জরিপের ফলে প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টির নিরঙ্কুশ বিজয়ের আভাস পাওয়া গেছে। যার ফলে দলের নেতা কিয়ার স্টারমার হতে যাচ্ছেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (৫ জুলাই) এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।
জরিপে বলা হয়েছে, মধ্যম-বামপন্থী লেবার পার্টি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের ৬৫০ আসনের মধ্যে ৪১০টি পেতে পারে। অপরদিকে ক্ষমতাসীন ডানপন্থী কনজারভেটিভ পার্টি পাচ্ছে মাত্র ১৩১টি আসন, যা ব্রিটেনের ইতিহাসে দলটির সবচেয়ে খারাপ ফল। যেখানে হাউস অফ কমন্সের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ৩২৬ আসনই যথেষ্ঠ।
অপর দিকে লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা ৬১ আসন পেতে পারে, যা মধ্যপন্থীদের আরও বলিষ্ঠ করবে। জরিপ বলছে— নাইজেল ফারাজের কট্টর ডানপন্থী রিফর্ম ইউকে পার্টিও ১৩টি আসন পেতে পারে এই নির্বাচনে।
সামাজিমাধ্যমে কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘যারা এই নির্বাচনে লেবার পার্টির পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন, যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন এবং আমাদের রূপান্তরিত লেবার পার্টির ওপর ভরসা রেখেছেন—তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’
স্টারমারের সহকারী অ্যাঞ্জেলা রেইনার বিবিসিকে বলেন, বুথফেরত জরিপের সংখ্যাগুলো আমাদের উৎসাহ দিচ্ছে, কিন্তু চূড়ান্ত ফল আসার আগে আমি উদযাপনের পক্ষে নই।
সর্বশেষ খবর বাঙালনিউজ গুগল নিউজ চ্যানেলে
কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক নেতা উইলিয়াম হেগ টাইমস রেডিওকে জানান, প্রাক্কলিত ফলাফল টোরি দলের ইতিহাসে এক বিপর্যয়। তার এই কথা ইঙ্গিত দিচ্ছে ১৯০৬ সালের নির্বাচনের দিকে। যখন ‘টোরি পার্টি’ নামে পরিচিত কনজারভেটিভ পার্টি সবচেয়ে খারাপ ফল করেছিল, অর্থাৎ ১৫৬ আসন জিতেছিল।
৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রের সবগুলোতে এখনো ভোট গণনা শেষ হয়নি। শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল নাগাদ চূড়ান্ত ফল জানা যেতে পারে।
যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় রাত ৯টায় ভোটগ্রহণ শেষে হিউস্টন ও সান্ডারল্যান্ড সাউথ আসনের ফল সবচেয়ে আগে ঘোষিত হয়। উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের এই আসনে লেবার পার্টির ব্রিজেট ফিলিপসন নির্বাচিত হন।
ফিলিপসনের লেবার পার্টির মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন। স্বাগত ভাষণে তিনি জানান, ব্রিটেনের জনগণ ‘উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ’ বেছে নিয়েছে।
‘(কনজারভেটিভ পার্টির) ১৪ বছরের শাসনামলের পর ব্রিটেনের জনগণ ভোটের মাধ্যমে পরিবর্তন এনেছে—লেবার (পার্টি) তাদের ওপর আনা ভরসার প্রতি সম্মান জানাবে’, যোগ করেন তিনি।
বিশ্লেষকদের মতে— ঘনিষ্ঠ পশ্চিমা মিত্রদের মতো যুক্তরাজ্যেও ডানপন্থীদের জাগরণ লক্ষণীয়। ফ্রান্সে কট্টর ডানপন্থীরা ক্ষমতার কাছে পৌঁছে গেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রেও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, ঋষি সুনাকের নেতৃত্বে ভরাডুবির শিকার হয়েছে কনজারভেটিভ দল। একজন ব্যর্থ নেতা হিসেবে বিদায় নেবেন তিনি।
পূর্বাভাষ সঠিক হলে শুক্রবার সকালে ঋষি সুনাক রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।
শুক্রবার সকালে জয়ী দলের নেতা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন। সে সময় রাজা তাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন।
পরবর্তীতে ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাসভবনে স্বাগত ভাষণের পর নতুন দেশপ্রধান তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করবেন।
সূত্র: ঢাকা মেইল