বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সিলেটে নদনদীর পানি ফের বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে আগে থেকেই পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া বাকি সবকটি নদনদীর পানিও হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে।

গত শুক্রবার রাত থেকে সিলেটে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত থেকে অঝোরে বৃষ্টি ঝরেছে। বৃষ্টি হচ্ছে উজানেও। নামছে পাহাড়ি ঢল। এতে ফের সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় নদী তীরবর্তী উপজেলার বাসিন্দাদের মাঝে আবারও বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

গত কয়েক দিন আগেই সিলেটে বন্যা দেখা দিয়েছিল। একরকম তলিয়ে গিয়েছিল নদী তীরবর্তী অঞ্চল। বন্যার সেই ক্ষত এখনো শুকায়নি। এর মাঝে ফের চোখ রাঙাচ্ছে বন্যা।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, সোমবার (০১ জুলাই) সকাল নয়টায় সিলেটের সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল রোববার এই নদীতে পানির উচ্চতা ছিল ১২ দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটার আজ সকাল নয়টায় পানির উচ্চতা বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার। এই পানি সিলেট পয়েন্টেও বেড়ে ১০ দশমিক ১৪ সেন্টিমিটার হয়েছে। রোববার এই পয়েন্ট পানি ছিল ৯ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার। অপরদিকে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট পানি বিপৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই পয়েন্টে পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। এই নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে রোববারের চেয়ে ২ সেন্টিমিটার বেড়েছে।

এ ছাড়া সারি, সারি-গোয়াইন, ডাউকি ও ধলাই নদের পানি প্রতি তিন ঘন্টায় ১০ থেকে ২০ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে ৩৯.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ৩১৩ মিলিমিটার। আর আজ সকাল ৬-৯টা তিন ঘন্টায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত অতিবৃষ্টির পূর্ভাবাস রয়েছে।

একই সঙ্গে আগামী ৭২ ঘণ্টায় সুরমা, কুশিয়ারা, পুরাতন-সুরমা, সারিগোয়াইন নদীর পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

এ বিষয়ে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় নদ-নদীতে দ্রুত পানি বাড়ছে। তবে বৃষ্টি কম হলে এবং ঢল থামলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।