সিলেট ও উজানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমায় প্লাবিত এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। উচু এলাকাগুলো থেকে পানি দ্রুতে নামলেও ভাটি এলাকায় ধীর গতিতে পানি নামছে। এরই মধ্যে কয়েক উপজেলায় নতুন করে প্লাবন দেখা দিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র ও দুর্গত মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে।
এদিকে পাঁচদিন পর আজ শুক্রবার সকালে সিলেটে সূর্যের দেখা মিলেছে। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে জনমনে। তবে পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সুরমা-কশিয়ারা নদীর পানি ছয়টি পয়েন্টে এখনো বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নদ-নদীর সব কটি পয়েন্টে পানির উচ্চতা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
এদিকে পানি নামতে শুরু করলেও বন্যায় আক্রান্ত মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। দুর্গত এলাকায় খাবার, শিশুখাদ্য ও সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় এখনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। অপরদিকে সিলেটের অধিকাংশ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও প্লাবিত রয়েছে। একদিনের ব্যবধানে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে।
আজ বিকেল তিনটায় সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জেলার সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ছয়টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। তথ্যমতে, সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ও কামাইঘাট পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। অপরদিকে কুশিয়ারা নদীর আমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ০৩ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জে ১০৩ সেন্টিমার ও শেরপর পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, নগর ও জেলার মোট ১৩৬টি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন এলাকার ১০ লাখ ৪৩ হাজার ১৬১ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে ১ হাজার ৫৫২টি গ্রাম। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৭১৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন ২৮ হাজার ৯২৫ জন মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রসহ বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য রান্না করা ও শুকনা খাবারসহ বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘আজ’ নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢল না হলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।