১১:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোটের আগে ‘খুশি রাখতে’ পদোন্নতি

পদ না থাকলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘খুশি রাখতে’ সামনে আরও পদোন্নতি আসছে বলে জানা গেছে।

তবে অনুমোদিত পদের চেয়ে অনেক বেশিসংখ্যক পদোন্নতি দেওয়ায় এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগকে আগের পদে কাজ করতে হবে। অথবা বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হয়ে থাকতে হবে। বিশ্লেষকদের মতে, আগের দুই জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও ভোটের আগে জনপ্রশাসনে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।

গত সোমবার রাতে দুটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২২১ জন উপসচিব ও সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে যুগ্ম সচিব করা হয়েছে। এর আগে গত মে মাসে ১১৪ জন অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। আগামী মাসে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৯তম ব্যাচকে (চাকরিতে যোগদান ২০১১) পদোন্নতি দেওয়া হবে বলে জনপ্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

১০ জন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিব হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুজন করে এবং ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের একজন করে রয়েছেন।

সর্বশেষ যে ২২১ জনকে উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সরকারের ১১ জন হলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একান্ত সচিব (পিএস)। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর পিএস আহমদ কবীর, বাণিজ্যমন্ত্রীর পিএস মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান সিকদার, সমাজকল্যাণমন্ত্রীর পিএস সারোয়ার হোসেন; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রীর পিএস মো. আক্তারুজ্জামান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর পিএস মো. রেজাউল আলম ও শিল্প প্রতিমন্ত্রীর পিএস শাহ মোমিন। জাতীয় সংসদের স্পিকারের পিএস আবদুল মালেক, সংসদ উপনেতার পিএস মোহাম্মদ শাহজালাল, হুইপের পিএস মো. তোফাজ্জল হোসেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের পিএস আল মামুন ও বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যানের পিএস মোহাম্মদ গোলাম কিবরীয়াকে যুগ্ম সচিব করা হয়েছে।

১০ জন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিব হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুজন করে এবং ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের একজন করে রয়েছেন।

পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনে কর্মরত ছয়জন কর্মকর্তাও আছেন।

এটা রাজকোষের অপচয়, পদ দিলেও তাঁদের প্রয়োজনীয় কাজ দিতে পারবে না মন্ত্রণালয়। এতে জনপ্রশাসনে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হবে।

মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, জনপ্রশাসনে যুগ্ম সচিবের অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৩৩২। গত বছরের নভেম্বরে ১৭৫ জনকে যুগ্ম সচিব করার পর এই পদে কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৭২৫। এই পদে সর্বশেষ সোমবার রাতে ২২১ জনকে পদোন্নতি দেওয়ার পর যুগ্ম সচিবের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৪৬। এখন দেশে অনুমোদিত পদের চেয়ে যুগ্ম সচিবের সংখ্যা প্রায় তিন গুণ।

মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদারের মতে, এটা রাজকোষের অপচয়, পদ দিলেও তাঁদের প্রয়োজনীয় কাজ দিতে পারবে না মন্ত্রণালয়। এতে জনপ্রশাসনে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পদ ছাড়াই নির্বাচনের আগে কর্মকর্তাদের খুশি করতে এ ধরনের ঢালাও পদোন্নতি দেওয়ার ফলে জনপ্রশাসনের আদর্শ কাঠামো ভেঙে যাচ্ছে। পদোন্নতি পেলেও অধিকাংশ কর্মকর্তা পদোন্নতি পাওয়া পদে চাকরি করতে পারছেন না। কাজ করতে হচ্ছে এক বা ক্ষেত্রবিশেষে দুই স্তর নিচের পদে। এটা জনপ্রশাসনের জন্য ক্ষতিকর। একপর্যায়ে এসব কর্মকর্তার মধ্যে হতাশা আসবে, যা কাজের গতি কমিয়ে দিতে পারে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে বেশ কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা পদোন্নতি পেতে পারেন। এখন উপসচিবের নিয়মিত পদ আছে এক হাজারের মতো।

তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি (নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল দাবি করে, এটা নির্বাচন সামনে রেখে পদোন্নতি নয়; এটা নিয়মিত পদোন্নতি। অনেক দিন পর এই পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

পদ না থাকলেও কেন এতসংখ্যক পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, এই প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, শূন্য পদের বিপরীতে পদোন্নতি দেওয়া হয়, বরং কমই দেওয়া হয়েছে। শুরুতে যে পদ ছিল, সবাই সেই সংখ্যা দিয়েই হিসাব করে, কিন্তু এরপর অনেক পদ সৃজিত হয়েছে, সেই হিসাব কারও কাছে নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পে, প্রেষণে, লিয়েনে, শিক্ষা ছুটিতে থাকেন, তাঁদের হিসাবে ধরা হয় না।

অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুস সবুর মণ্ডলের সঙ্গে গত রাতে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। পরে জানা যায়, তাঁকে গতকাল মঙ্গলবারই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সরকার এখন পুরোপুরি প্রশাসনের ওপর নির্ভরশীল। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের খুশি করতে ও সন্তুষ্ট রাখতেই পদ না থাকলেও ঢালাওভাবে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে এভাবে পদোন্নতি দিয়েছে, এবারও তা-ই হচ্ছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে বেশ কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা পদোন্নতি পেতে পারেন। এখন উপসচিবের নিয়মিত পদ আছে এক হাজারের মতো।

যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, সারা দেশে সমপর্যায়ের পদগুলো মিলিয়ে উপসচিব বা সমপর্যায়ের পদ আছে ১ হাজার ৭৫০-এর মতো। বর্তমানে এই পদে কর্মরত আছেন ১ হাজার ৬৯৮ জন। নতুন পদোন্নতির পর অনেক উপসচিবকেও জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিবের পদে কাজ করতে হবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সরকার এখন পুরোপুরি প্রশাসনের ওপর নির্ভরশীল। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের খুশি করতে ও সন্তুষ্ট রাখতেই পদ না থাকলেও ঢালাওভাবে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে এভাবে পদোন্নতি দিয়েছে, এবারও তা-ই হচ্ছে।

বিষয়

ভোটের আগে ‘খুশি রাখতে’ পদোন্নতি

প্রকাশিত: ০৫:৫৪:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পদ না থাকলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘খুশি রাখতে’ সামনে আরও পদোন্নতি আসছে বলে জানা গেছে।

তবে অনুমোদিত পদের চেয়ে অনেক বেশিসংখ্যক পদোন্নতি দেওয়ায় এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগকে আগের পদে কাজ করতে হবে। অথবা বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হয়ে থাকতে হবে। বিশ্লেষকদের মতে, আগের দুই জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও ভোটের আগে জনপ্রশাসনে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।

গত সোমবার রাতে দুটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২২১ জন উপসচিব ও সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে যুগ্ম সচিব করা হয়েছে। এর আগে গত মে মাসে ১১৪ জন অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। আগামী মাসে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৯তম ব্যাচকে (চাকরিতে যোগদান ২০১১) পদোন্নতি দেওয়া হবে বলে জনপ্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

১০ জন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিব হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুজন করে এবং ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের একজন করে রয়েছেন।

সর্বশেষ যে ২২১ জনকে উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সরকারের ১১ জন হলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একান্ত সচিব (পিএস)। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর পিএস আহমদ কবীর, বাণিজ্যমন্ত্রীর পিএস মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান সিকদার, সমাজকল্যাণমন্ত্রীর পিএস সারোয়ার হোসেন; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রীর পিএস মো. আক্তারুজ্জামান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর পিএস মো. রেজাউল আলম ও শিল্প প্রতিমন্ত্রীর পিএস শাহ মোমিন। জাতীয় সংসদের স্পিকারের পিএস আবদুল মালেক, সংসদ উপনেতার পিএস মোহাম্মদ শাহজালাল, হুইপের পিএস মো. তোফাজ্জল হোসেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের পিএস আল মামুন ও বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যানের পিএস মোহাম্মদ গোলাম কিবরীয়াকে যুগ্ম সচিব করা হয়েছে।

১০ জন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিব হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুজন করে এবং ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের একজন করে রয়েছেন।

পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনে কর্মরত ছয়জন কর্মকর্তাও আছেন।

এটা রাজকোষের অপচয়, পদ দিলেও তাঁদের প্রয়োজনীয় কাজ দিতে পারবে না মন্ত্রণালয়। এতে জনপ্রশাসনে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হবে।

মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, জনপ্রশাসনে যুগ্ম সচিবের অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৩৩২। গত বছরের নভেম্বরে ১৭৫ জনকে যুগ্ম সচিব করার পর এই পদে কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৭২৫। এই পদে সর্বশেষ সোমবার রাতে ২২১ জনকে পদোন্নতি দেওয়ার পর যুগ্ম সচিবের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৪৬। এখন দেশে অনুমোদিত পদের চেয়ে যুগ্ম সচিবের সংখ্যা প্রায় তিন গুণ।

মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদারের মতে, এটা রাজকোষের অপচয়, পদ দিলেও তাঁদের প্রয়োজনীয় কাজ দিতে পারবে না মন্ত্রণালয়। এতে জনপ্রশাসনে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পদ ছাড়াই নির্বাচনের আগে কর্মকর্তাদের খুশি করতে এ ধরনের ঢালাও পদোন্নতি দেওয়ার ফলে জনপ্রশাসনের আদর্শ কাঠামো ভেঙে যাচ্ছে। পদোন্নতি পেলেও অধিকাংশ কর্মকর্তা পদোন্নতি পাওয়া পদে চাকরি করতে পারছেন না। কাজ করতে হচ্ছে এক বা ক্ষেত্রবিশেষে দুই স্তর নিচের পদে। এটা জনপ্রশাসনের জন্য ক্ষতিকর। একপর্যায়ে এসব কর্মকর্তার মধ্যে হতাশা আসবে, যা কাজের গতি কমিয়ে দিতে পারে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে বেশ কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা পদোন্নতি পেতে পারেন। এখন উপসচিবের নিয়মিত পদ আছে এক হাজারের মতো।

তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি (নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল দাবি করে, এটা নির্বাচন সামনে রেখে পদোন্নতি নয়; এটা নিয়মিত পদোন্নতি। অনেক দিন পর এই পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

পদ না থাকলেও কেন এতসংখ্যক পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, এই প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, শূন্য পদের বিপরীতে পদোন্নতি দেওয়া হয়, বরং কমই দেওয়া হয়েছে। শুরুতে যে পদ ছিল, সবাই সেই সংখ্যা দিয়েই হিসাব করে, কিন্তু এরপর অনেক পদ সৃজিত হয়েছে, সেই হিসাব কারও কাছে নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পে, প্রেষণে, লিয়েনে, শিক্ষা ছুটিতে থাকেন, তাঁদের হিসাবে ধরা হয় না।

অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুস সবুর মণ্ডলের সঙ্গে গত রাতে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। পরে জানা যায়, তাঁকে গতকাল মঙ্গলবারই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সরকার এখন পুরোপুরি প্রশাসনের ওপর নির্ভরশীল। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের খুশি করতে ও সন্তুষ্ট রাখতেই পদ না থাকলেও ঢালাওভাবে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে এভাবে পদোন্নতি দিয়েছে, এবারও তা-ই হচ্ছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে বেশ কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা পদোন্নতি পেতে পারেন। এখন উপসচিবের নিয়মিত পদ আছে এক হাজারের মতো।

যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, সারা দেশে সমপর্যায়ের পদগুলো মিলিয়ে উপসচিব বা সমপর্যায়ের পদ আছে ১ হাজার ৭৫০-এর মতো। বর্তমানে এই পদে কর্মরত আছেন ১ হাজার ৬৯৮ জন। নতুন পদোন্নতির পর অনেক উপসচিবকেও জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিবের পদে কাজ করতে হবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সরকার এখন পুরোপুরি প্রশাসনের ওপর নির্ভরশীল। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের খুশি করতে ও সন্তুষ্ট রাখতেই পদ না থাকলেও ঢালাওভাবে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে এভাবে পদোন্নতি দিয়েছে, এবারও তা-ই হচ্ছে।