০৪:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাকরিপ্রার্থীদের টাকা ফেরত দিলেন প্রতিমন্ত্রীর প্রতিনিধি

চাকরি দেওয়ার কথা বলে সাত চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে নেওয়া সাড়ে ৯ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। তবে তার দাবি তিনি এই ঘুষ গ্রহণে জড়িত ছিলেন না।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে প্রতিমন্ত্রীর দুজন প্রতিনিধি রাজধানীর মিন্টো রোডে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে গিয়ে ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যারা টাকা নিয়েছিল তাদের একজনকে ডেকে বলেছি টাকাগুলো ফেরত দেওয়া জন্য। না হলে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এরপর শুনেছি টাকাগুলো তারা ফেরত দিয়েছে।’

তবে তিনি নিজে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ’আমার নির্বাচনী এলাকার কয়েক ব্যক্তি আমার নামে চাকরি দেওয়ার কথা বলে কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল; সেটা আমি জানতাম না।’

টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ভুক্তভোগী আবু সুফিয়ান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মন্ত্রীর গাড়িচালক ও এক ভাগনে টাকা নিয়েছিলেন। আমি সাতজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা তুলে তাদের দিয়েছিলাম।’

আবু সুফিয়ান বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর একজন প্রতিনিধি ডিবি কার্যালয়ে এসে টাকা ফেরত দিয়েছেন। ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি) ফজলে এলাহী আমাদের টাকা বুঝিয়ে দিয়েছেন।’

তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এডিসি ফজলে এলাহী।

প্রতিমন্ত্রীর ভাগনে লিটন ও ড্রাইভার মোমিনকে টাকা বুঝিয়ে দেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

ডিবির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ ফজলে এলাহী জানান, যারা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে টাকা দিয়েছিলেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে এবং তারা যেন টাকা বুঝে পান সেটা নিশ্চিত করা হবে। আবু সুফিয়ানকে ওইসব ব্যক্তিদের নাম ও ফোন নম্বর দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে ৭ ডিসেম্বর ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে পাওনাদারদের প্রতিমন্ত্রীর বাসায় ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। ওই দিন ভুক্তভোগী তিনজনের মধ্যে দুজন প্রতিমন্ত্রীর বাসা থেকে নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে যান। আবু সুফিয়ান নামের একজন প্রাণ বাঁচাতে প্রতিমন্ত্রীর বাসার দেয়াল টপকে ডিবি কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। এ সময় তাকে আটক করেন ডিবি সদস্যরা। সবশেষ শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) আবু সুফিয়ানকে ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ। এর মধ্যে প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা আবু সুফিয়ানের সঙ্গে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে। পরে আবু সুফিয়ানের কাছে যে পরিমাণ টাকার ডকুমেন্ট রয়েছে, সেই পরিমাণ টাকা ফেরত দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

উল্লেখ্য, মো. জাকির হোসেন ২০০৮ সালের নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে।

সম্প্রতি ঘোষিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি জাকির হোসেন।

সূত্র : ঢাকাটাইমস

বিষয়

চাকরিপ্রার্থীদের টাকা ফেরত দিলেন প্রতিমন্ত্রীর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৬:০০:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

চাকরি দেওয়ার কথা বলে সাত চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে নেওয়া সাড়ে ৯ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। তবে তার দাবি তিনি এই ঘুষ গ্রহণে জড়িত ছিলেন না।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে প্রতিমন্ত্রীর দুজন প্রতিনিধি রাজধানীর মিন্টো রোডে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে গিয়ে ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যারা টাকা নিয়েছিল তাদের একজনকে ডেকে বলেছি টাকাগুলো ফেরত দেওয়া জন্য। না হলে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এরপর শুনেছি টাকাগুলো তারা ফেরত দিয়েছে।’

তবে তিনি নিজে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ’আমার নির্বাচনী এলাকার কয়েক ব্যক্তি আমার নামে চাকরি দেওয়ার কথা বলে কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল; সেটা আমি জানতাম না।’

টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ভুক্তভোগী আবু সুফিয়ান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মন্ত্রীর গাড়িচালক ও এক ভাগনে টাকা নিয়েছিলেন। আমি সাতজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা তুলে তাদের দিয়েছিলাম।’

আবু সুফিয়ান বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর একজন প্রতিনিধি ডিবি কার্যালয়ে এসে টাকা ফেরত দিয়েছেন। ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি) ফজলে এলাহী আমাদের টাকা বুঝিয়ে দিয়েছেন।’

তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এডিসি ফজলে এলাহী।

প্রতিমন্ত্রীর ভাগনে লিটন ও ড্রাইভার মোমিনকে টাকা বুঝিয়ে দেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

ডিবির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ ফজলে এলাহী জানান, যারা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে টাকা দিয়েছিলেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে এবং তারা যেন টাকা বুঝে পান সেটা নিশ্চিত করা হবে। আবু সুফিয়ানকে ওইসব ব্যক্তিদের নাম ও ফোন নম্বর দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে ৭ ডিসেম্বর ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে পাওনাদারদের প্রতিমন্ত্রীর বাসায় ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। ওই দিন ভুক্তভোগী তিনজনের মধ্যে দুজন প্রতিমন্ত্রীর বাসা থেকে নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে যান। আবু সুফিয়ান নামের একজন প্রাণ বাঁচাতে প্রতিমন্ত্রীর বাসার দেয়াল টপকে ডিবি কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। এ সময় তাকে আটক করেন ডিবি সদস্যরা। সবশেষ শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) আবু সুফিয়ানকে ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ। এর মধ্যে প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা আবু সুফিয়ানের সঙ্গে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে। পরে আবু সুফিয়ানের কাছে যে পরিমাণ টাকার ডকুমেন্ট রয়েছে, সেই পরিমাণ টাকা ফেরত দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

উল্লেখ্য, মো. জাকির হোসেন ২০০৮ সালের নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে।

সম্প্রতি ঘোষিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি জাকির হোসেন।

সূত্র : ঢাকাটাইমস