১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শাখা ছাত্রদলের কমিটি বাতিল

সিকৃবিতে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

পোস্টার ছিঁড়ার জেরে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ছাত্রদল ও বিএনপি সমর্থকদের সঙ্গে ‘ছাত্রলীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের’ মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ছাত্রদলের দুই পক্ষের অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ হয়। পরে সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ঘটনার সময় উপস্থিত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী জানান, আজ (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষিগুচ্ছ ভর্তি–ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ব্যানার সাঁটায়। তবে কে বা কারা সেসব ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।

ব্যানার ছিঁড়ার জেরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় হলে থাকা কিছু শিক্ষার্থীর কথা–কাটাকাটি হয়। সে সময় সেখানে থাকা বহিরাগত এক ছাত্রদল নেতাও হলে থাকা ওই শিক্ষার্থীদের আক্রোশের শিকার হন। পরে বহিরাগত ওই ছাত্রদল নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বালুচর ও নয়াবাজার এলাকার মানুষ নিয়ে এসে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন।

এরপরই পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে সেনাসদস্যরা এসে রাত দেড়টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সংঘর্ষে মো. আবু সাঈদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছাত্রদল নেতাসহ অন্তত ছয়জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, এলাকার বিএনপি সমর্থকদের অনেককে লাঠিসোঁটা হাতে মারামারির সময় দেখা গেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা আবু সাঈদ জানান,  ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাইরে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদল ব্যানার সাঁটিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দোসর কিছু শিক্ষার্থী ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দেয়। এটা জিজ্ঞেস করতে গেলে ওই শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের কর্মীদের ওপর চড়াও হন।

আবু সাঈদ আরও জানান, মারামারির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। যাঁরা ব্যানার ছিঁড়েছে, পদ-পদবি না থাকলেও তাঁরা ছাত্রলীগের সমর্থক বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের জানান, ‘পোস্টার ছিঁড়ার জেরে ছাত্রদল ও এলাকাবাসীর সঙ্গে হলে থাকা কিছু শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ হয়েছে। হলে থাকা শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ-সমর্থিত বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তবে তাঁদের পুরোপুরি পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে, এ ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করেছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সাহেদুল ইসলাম রোমেনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি হয়েছিল। এরপর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই সংগঠনটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

বিষয়

শাখা ছাত্রদলের কমিটি বাতিল

সিকৃবিতে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ১২:২৪:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

পোস্টার ছিঁড়ার জেরে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ছাত্রদল ও বিএনপি সমর্থকদের সঙ্গে ‘ছাত্রলীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের’ মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ছাত্রদলের দুই পক্ষের অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ হয়। পরে সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ঘটনার সময় উপস্থিত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী জানান, আজ (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষিগুচ্ছ ভর্তি–ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ব্যানার সাঁটায়। তবে কে বা কারা সেসব ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।

ব্যানার ছিঁড়ার জেরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় হলে থাকা কিছু শিক্ষার্থীর কথা–কাটাকাটি হয়। সে সময় সেখানে থাকা বহিরাগত এক ছাত্রদল নেতাও হলে থাকা ওই শিক্ষার্থীদের আক্রোশের শিকার হন। পরে বহিরাগত ওই ছাত্রদল নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বালুচর ও নয়াবাজার এলাকার মানুষ নিয়ে এসে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন।

এরপরই পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে সেনাসদস্যরা এসে রাত দেড়টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সংঘর্ষে মো. আবু সাঈদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছাত্রদল নেতাসহ অন্তত ছয়জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, এলাকার বিএনপি সমর্থকদের অনেককে লাঠিসোঁটা হাতে মারামারির সময় দেখা গেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা আবু সাঈদ জানান,  ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাইরে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদল ব্যানার সাঁটিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দোসর কিছু শিক্ষার্থী ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দেয়। এটা জিজ্ঞেস করতে গেলে ওই শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের কর্মীদের ওপর চড়াও হন।

আবু সাঈদ আরও জানান, মারামারির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। যাঁরা ব্যানার ছিঁড়েছে, পদ-পদবি না থাকলেও তাঁরা ছাত্রলীগের সমর্থক বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের জানান, ‘পোস্টার ছিঁড়ার জেরে ছাত্রদল ও এলাকাবাসীর সঙ্গে হলে থাকা কিছু শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ হয়েছে। হলে থাকা শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ-সমর্থিত বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তবে তাঁদের পুরোপুরি পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে, এ ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করেছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সাহেদুল ইসলাম রোমেনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি হয়েছিল। এরপর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই সংগঠনটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।