কোটা সংস্কারের আন্দোলন দমনের নামে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্ত্রাস চালিয়ে শত শত ছাত্র-জনতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সরকারের ক্ষমতার ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। জনদাবির প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সব দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কারণে দেশব্যাপী সরকারের নির্মম ও নির্দয় অত্যাচারের তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্নভাবে যেসব তথ্য আসছে, সেগুলো রীতিমতো রোমহর্ষক ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে সাধারণ ছাত্র-জনতা এবং বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অনেককে তুলে নিয়ে গেলেও তাদের খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না।
অনেককে আটক করার পর আদালতে নেওয়ার আগে ও রিমান্ডে থাকা অবস্থায় অমানুষিক ও অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও অনেককে গ্রেপ্তার করার চার থেকে পাঁচ দিন বা এরও বেশি সময় পর আদালতে নেওয়া হচ্ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে চাপ প্রয়োগ করার কথা উল্লেখ করে তার সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, নির্যাতনের মাধ্যমে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা যায়, কিন্তু আবেগ-অনুভূতি ও সঙ্গীদের রক্তমাখা শার্টের গন্ধ শিক্ষার্থীদের বিবেককে সব সময় তাড়া করবে। সুযোগ পেলেই তাঁরা সেটির বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের নির্দেশে আন্দোলনে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পরিবর্তন করা হচ্ছে। অনেককে ময়নাতদন্ত ছাড়াই আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়েছে।
সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দমনে উঠেপড়ে লেগেছে দাবি করে ফখরুল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের রিমান্ড বাতিলের আহ্বান জানান।