০৩:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাহাড়ি ঢলে তৃতীয় দফায় প্লাবিত সীমান্ত জনপদ

গতকাল সোমবার সকাল থেকে সিলেটে মুষলধারে হচ্ছে বৃষ্টি। একই সঙ্গে ভারতের মেঘালয়ে অব্যাহত রয়েছে ভারী বর্ষণ। ফলে পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে তৃতীয় দফায় প্লাবিত হয়েছে সীমান্ত জনপদ জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট এলাকার নিম্নাঞ্চল।

সারী, করিচ, বড় নয়াগং ও রাংপানি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সোমবারের ভারি বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। রাস্তাঘাট ডুবে বাসা-বাড়িতে ওঠেছে পানি। এছাড়াও উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মানুষজন ফের ছুটছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। উজানে বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানি ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষ করে পিয়াইন, সারী নদীর পানি খরস্রোত প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেটে গত ২৭ মে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দুই সপ্তাহ ব্যাপী স্থায়ী এ বন্যায় পানিবন্দী ছিলেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। এরপর ১৫ জুন থেকে ফের বন্যা হয় সিলেটে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার অতিভারী বর্ষণে লাখ লাখ মানুষ পানিন্দি হয়ে পড়ে। এর রেশ না কাটতেই সোমবার (১ জুলাই) থেকে সিলেটে ধাক্কা দেয় তৃতীয় দফা বন্যা। রবিবার (৩০ জুন) দিনভর সিলেটে থেমে ও উজানে ভারী বৃষ্টির ফলে নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলার জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাট উপজেলার যেসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছিলো সেসব এলাকা ফের প্লাবিত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট, জৈন্তাপুর ও চারিকাটা, দরবস্ত, ফতেপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। এ ছাড়া বন্যায় আটকে পড়া পরিবারের লোকজনকে উঁচুস্থানে আশ্রয়ের জন্য ছুটতে দেখা যায়। বন্যা পরিস্থিতি ও বন্যায় আটকা পড়াদের খোঁজ রাখছে জনপ্রতিনিধি সহ উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে কানাইঘাটের সুরমা ডাইকের অন্তত ১৮টি ভাঙন দিয়ে তীব্র গতিতে সুরমা ও লোভা নদীর পানি লোকালয়ে ঢোকছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়ার তথ্যমতে, তৃতীয় দফায় ভারি বর্ষণে জৈন্তাপুর উপজেলা বন্যা পরিস্থিতি আগের আকার ধারন করেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলাবাসীকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে উপজেলায় ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসাইন বলেন, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত সিলেটে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যমতে, মেঘালয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগেরদিন (৩০ জুন) মেঘালয় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৮৬ মিলিমিটার। যে কারণে পাহাড়ি নদীগুলো দিয়ে ঢলের পানি নেমে আসছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ফের বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া নদনদী আরও কয়েকটি পয়েন্টি পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

পাহাড়ি ঢলে তৃতীয় দফায় প্লাবিত সীমান্ত জনপদ

প্রকাশিত: ১০:২৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

গতকাল সোমবার সকাল থেকে সিলেটে মুষলধারে হচ্ছে বৃষ্টি। একই সঙ্গে ভারতের মেঘালয়ে অব্যাহত রয়েছে ভারী বর্ষণ। ফলে পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে তৃতীয় দফায় প্লাবিত হয়েছে সীমান্ত জনপদ জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট এলাকার নিম্নাঞ্চল।

সারী, করিচ, বড় নয়াগং ও রাংপানি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সোমবারের ভারি বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। রাস্তাঘাট ডুবে বাসা-বাড়িতে ওঠেছে পানি। এছাড়াও উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মানুষজন ফের ছুটছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। উজানে বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানি ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষ করে পিয়াইন, সারী নদীর পানি খরস্রোত প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেটে গত ২৭ মে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দুই সপ্তাহ ব্যাপী স্থায়ী এ বন্যায় পানিবন্দী ছিলেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। এরপর ১৫ জুন থেকে ফের বন্যা হয় সিলেটে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার অতিভারী বর্ষণে লাখ লাখ মানুষ পানিন্দি হয়ে পড়ে। এর রেশ না কাটতেই সোমবার (১ জুলাই) থেকে সিলেটে ধাক্কা দেয় তৃতীয় দফা বন্যা। রবিবার (৩০ জুন) দিনভর সিলেটে থেমে ও উজানে ভারী বৃষ্টির ফলে নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলার জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাট উপজেলার যেসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছিলো সেসব এলাকা ফের প্লাবিত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট, জৈন্তাপুর ও চারিকাটা, দরবস্ত, ফতেপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। এ ছাড়া বন্যায় আটকে পড়া পরিবারের লোকজনকে উঁচুস্থানে আশ্রয়ের জন্য ছুটতে দেখা যায়। বন্যা পরিস্থিতি ও বন্যায় আটকা পড়াদের খোঁজ রাখছে জনপ্রতিনিধি সহ উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে কানাইঘাটের সুরমা ডাইকের অন্তত ১৮টি ভাঙন দিয়ে তীব্র গতিতে সুরমা ও লোভা নদীর পানি লোকালয়ে ঢোকছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়ার তথ্যমতে, তৃতীয় দফায় ভারি বর্ষণে জৈন্তাপুর উপজেলা বন্যা পরিস্থিতি আগের আকার ধারন করেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলাবাসীকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে উপজেলায় ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসাইন বলেন, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত সিলেটে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যমতে, মেঘালয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগেরদিন (৩০ জুন) মেঘালয় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৮৬ মিলিমিটার। যে কারণে পাহাড়ি নদীগুলো দিয়ে ঢলের পানি নেমে আসছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ফের বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া নদনদী আরও কয়েকটি পয়েন্টি পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।