০৬:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

দাবি পূরণ না হলে গ্যাস ফিল্ড ঘেরাও করবে ক্ষুব্ধ জনতা

ছবি: সংগৃহীত

তেল-গ্যাস উত্তোলন হওয়া এলাকার বেশিরভাগ মানুষ সুবিধাবঞ্চিত থাকা এবং স্থানীয় লোকজন গ্যাস ফিল্ডে চাকরি না পাওয়ার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলাবাসী। তারা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এর মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে গোলাপগঞ্জস্থ গ্যাস ফিল্ড ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

রবিবার (৩০ জুন) বেলা আড়াইটায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন এই আল্টিমেটাম ও কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করেন জাতীয় তেল গ্যাস রক্ষা ও অধিকার বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় তেল গ্যাস রক্ষা ও অধিকার বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের গোলাপগঞ্জ উপজেলা আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর রুহিন আহমদ খান। তিনি বলেন- সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থেকে উত্তোলন করা তেল-গ্যাস দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করলেও সেই গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৭৫ ভাগ মানুষই গ্যাসের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অপরদিকে বাইরের এলাকার মানুষরা কাজ পায়, কিন্তু যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় লোকজন কাজ পাচ্ছেন না গোলাপগঞ্জের গ্যাস ফিল্ডে। আবার তেল-গ্যাস উত্তোলনের কারণে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন গ্যাসফিল্ড সংলগ্ন এলাকার মানুষরা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, গোলাপগঞ্জে নতুন করে যে কূপ থেকে গ্যাস মিলছে সেখান থেকে প্রতিদিন আরও ১৬২০ কোটি টাকার গ্যাস যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। কিন্তু এর কোনো সুফলই পাচ্ছেন না গোলাপগঞ্জবাসী। দীর্ঘদিন থেকে গ্যাস সংযোগের দাবি জানিয়ে আসলেও ৭৫ ভাগ মানুষই গ্যাস সংযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানানো হয়- স্থানীয়দের গ্যাসের চাহিদা পূরণ করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গোলাপগঞ্জের গ্যাস ফিল্ডে বাইরের লোকেরা কাজ পেলেও স্থানীয়রা অবহেলার শিকার হচ্ছেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয়দের বঞ্চিত করে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বাইরে থেকে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অস্থানীয়দের নিয়োগ বাতিল করে স্থানীয় যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রতিনিয়ত তেল-গ্যাস উত্তোলনের কারণে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। সাধারণ নলকূপ দিয়ে এখন আর পানি উঠছে না। ফলে পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে পর্যাপ্ত পরিমাণে গভীর নলকূপ স্থাপনের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন-কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান, ২ জুলাই উপজেলার হাট-বাজার ও জনসমাগমস্থলে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ, ৬ ও ৭ জুলাই উপজেলাজুড়ে মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা এবং ৮ জুলাই গোলাপগঞ্জ গ্যাস প্ল্যান্ট ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তেল গ্যাস রক্ষা ও অধিকার বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার শাহজাহান, নাজিম উদ্দিন, সদস্য সচিব আবদুল লতিফ খান, পৌর কাউন্সিলর ফারুক আলী এবং জাহির উদ্দিন, মাসুদুর রহামন চৌধুরী ও প্রিন্স বাহার আহমদ চৌধুরী।

বিষয়

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

দাবি পূরণ না হলে গ্যাস ফিল্ড ঘেরাও করবে ক্ষুব্ধ জনতা

প্রকাশিত: ০৭:০৮:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

তেল-গ্যাস উত্তোলন হওয়া এলাকার বেশিরভাগ মানুষ সুবিধাবঞ্চিত থাকা এবং স্থানীয় লোকজন গ্যাস ফিল্ডে চাকরি না পাওয়ার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলাবাসী। তারা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এর মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে গোলাপগঞ্জস্থ গ্যাস ফিল্ড ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

রবিবার (৩০ জুন) বেলা আড়াইটায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন এই আল্টিমেটাম ও কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করেন জাতীয় তেল গ্যাস রক্ষা ও অধিকার বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় তেল গ্যাস রক্ষা ও অধিকার বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের গোলাপগঞ্জ উপজেলা আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর রুহিন আহমদ খান। তিনি বলেন- সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থেকে উত্তোলন করা তেল-গ্যাস দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করলেও সেই গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৭৫ ভাগ মানুষই গ্যাসের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অপরদিকে বাইরের এলাকার মানুষরা কাজ পায়, কিন্তু যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় লোকজন কাজ পাচ্ছেন না গোলাপগঞ্জের গ্যাস ফিল্ডে। আবার তেল-গ্যাস উত্তোলনের কারণে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন গ্যাসফিল্ড সংলগ্ন এলাকার মানুষরা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, গোলাপগঞ্জে নতুন করে যে কূপ থেকে গ্যাস মিলছে সেখান থেকে প্রতিদিন আরও ১৬২০ কোটি টাকার গ্যাস যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। কিন্তু এর কোনো সুফলই পাচ্ছেন না গোলাপগঞ্জবাসী। দীর্ঘদিন থেকে গ্যাস সংযোগের দাবি জানিয়ে আসলেও ৭৫ ভাগ মানুষই গ্যাস সংযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানানো হয়- স্থানীয়দের গ্যাসের চাহিদা পূরণ করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গোলাপগঞ্জের গ্যাস ফিল্ডে বাইরের লোকেরা কাজ পেলেও স্থানীয়রা অবহেলার শিকার হচ্ছেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয়দের বঞ্চিত করে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বাইরে থেকে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অস্থানীয়দের নিয়োগ বাতিল করে স্থানীয় যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রতিনিয়ত তেল-গ্যাস উত্তোলনের কারণে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। সাধারণ নলকূপ দিয়ে এখন আর পানি উঠছে না। ফলে পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে পর্যাপ্ত পরিমাণে গভীর নলকূপ স্থাপনের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন-কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান, ২ জুলাই উপজেলার হাট-বাজার ও জনসমাগমস্থলে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ, ৬ ও ৭ জুলাই উপজেলাজুড়ে মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা এবং ৮ জুলাই গোলাপগঞ্জ গ্যাস প্ল্যান্ট ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তেল গ্যাস রক্ষা ও অধিকার বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার শাহজাহান, নাজিম উদ্দিন, সদস্য সচিব আবদুল লতিফ খান, পৌর কাউন্সিলর ফারুক আলী এবং জাহির উদ্দিন, মাসুদুর রহামন চৌধুরী ও প্রিন্স বাহার আহমদ চৌধুরী।