সিলেটের নদ-নদীগুলো পানিতে টইটুম্বুর থাকায় প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি ধীর গতিতে নামছে। গত বুধবার রাত থেকে সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাত হয়নি। উজান থেকে ঢলও নামছে কম। এ অবস্থায় নদনদীরগুলোর পানি কমেছে। তবে দুই জেলার নিচু এলাকাগুলো থেকে পানি খুব ধীর গতিতে নামছে। এখনও সুরমা-কুশিয়ারার চারটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টিপাত কমায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। একইসঙ্গে নদ-নদীর পানিও কমেছে। তবে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামা অব্যহত থাকায় কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। গতকাল সকাল থেকে ফের কুশিয়ারা নদীর এই পয়েন্টে পানির উচ্চতা বাড়ছে। এতে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দুর্গত এলাকায় ভোগান্তিও বাড়ছে। অপরদিকে সিলেট নগরের জলাবদ্ধ এলাকাগুলো থেকেও পানি নামছে ধীরে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সবশেষ রিপোর্টে বলা হয়েছে, রোববার বিকাল ছয়টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর কুশিয়ার নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ ও শেরপুর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, সিলেটে এখনো ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রন্ত। এর মধ্যে মহানগরে ১৫ হাজার। বর্তমানে মহানগরের ৮টি ওয়ার্ড জেলার ১০৭টি ইউনিয়নে বন্যার পানি রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ১৯ হাজার ৭৩৮ জন মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। পৌঁছানো হচ্ছে বিশুদ্ধপানি ও ওষুধপত্র।
সিলেট আবহাওয়াঅফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আগামী ২৮ তারিখ থেকে সিলেট ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জের উৎসমূখ জুড়ি নদী ও শেরপুরের মনু নদী কুশিয়ারাতে যুক্ত তাই কুশিয়ারা নদীর পানি নামছে ধীরে। এ ছাড়া নিম্নাঞ্চলের প্রায় সব এলাকা এখনও প্লাবিত। তবে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে গেলে ও সিলেট অঞ্চলে প্রতিদিন রোদ হলে বন্যার পানি নেমে যাবে।