সিলেটে নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে জেলার সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ছয়টি পয়েন্টে পানি এখনো বিপৎসসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া বাকি সব কটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে।
টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে গত সোমবার থেকে সিলেটে দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে। এর আগে গত ২৯ মে সিলেটে বন্যা হয়েছিল, সেটি ৮ জুনের পর অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায়। এর রেশ না কাটতেই ফের বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট।
পাউবোর তথ্যমতে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টায় জেলার দুটি নদীর পানি বিপৎসীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর মধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা এই পানি বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। একই নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল এই পানি ছিল ৩৭ সেন্টিমিটার ওপরে। আর কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। গতকাল এই পয়েন্ট পানির উচ্চতা ছিল ৬২ সেন্টিমিটার। এই পানি শেওলা পয়েন্ট ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল এই পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ৪০ সেন্টিমিটার। এই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০১ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল এই পানি ছিল ১০০ সেন্টিমিটার। একই নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল এই পানি ছিল ২১ সেন্টিমিটার উপরে। এছাড়া বকি সদ-নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার পর্যন্ত সিলেট মহানগরীর ২৩টি ওয়ার্ডসহ জেলার ১২৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১ হাজার ৫৪৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ৮ লাখ ২৫ হাজার ২৫৬ জন বন্যা আক্রান্ত রয়েছেন। এর মধ্যে সিলেট মহানগরীতে বন্যাক্রান্ত হয়েছেন ৫০ হাজার মানুষ। জেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৬৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ১৯ হাজার ৯৪৯ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১০ মিলিমিটার। আজও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। তবে গত ২৪ ঘন্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত হয়নি।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে বৃষ্টিপাত কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।