০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিপৎসীমার ওপরে চার নদী

সিলেটে ৮৬৪টি গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি প্রায় ৪ লাখ মানুষ

বন্যায় প্লাবিত গ্রামীণ সড়ক। সংগৃহীত ছবি

অতিবৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের চারটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টার রিপোর্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, টানা বৃষ্টিতে নদী ও ছড়া উপচে পানি নগরীতে প্রবেশ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সিলেট নগরীর ভেতরে অনেক বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগরের অভিজাত এলাকা শাহজালাল উপশহর প্রায় পুরোটাই পানির নিচে। অনেকের বাসার নিচতলায় গলা সমান পানি। এছাড়া যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া ও মেজরটিলাসহ মহানগরের অধিকাংশ নিচু এলাকা বন্যা কবলিত।

জেলা প্রশাসন সূত্র জনায়, আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত সিলেট মহানগর ও জেলায় প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে মহানগরে ১৫টি এলাকার ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এ ছাড়া মহানগর ও জেলার ১৪টি উপজেলায় ৮৬৪টি গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো। এরই মধ্যে প্লাবিত এলাকাগুলোয় গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক কৃষিজমির ফসল তলিয়ে গেছে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১২২সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ও সারি গোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সব কটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানিয়েছেন, সিলেটে ২৪ ঘন্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত) ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি ৭৬ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী তিন দিন টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এদিকে, ভারতের আইএমডি’র তথ্যমতে গত ২৪ ঘন্টায় চেরাপুঞ্জিতে ৩৯৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে বৃষ্টিপাত কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. ওমর সানি আকন জানিয়েছেন, বন্যায় সিলেট মহানগর ও জেলায় ৮৬৪টি গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। মোট ৬১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্য পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন ৩ হাজার ৯২৪ জন মানুষ।

বিপৎসীমার ওপরে চার নদী

সিলেটে ৮৬৪টি গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি প্রায় ৪ লাখ মানুষ

প্রকাশিত: ০৮:০০:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪

অতিবৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের চারটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টার রিপোর্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, টানা বৃষ্টিতে নদী ও ছড়া উপচে পানি নগরীতে প্রবেশ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সিলেট নগরীর ভেতরে অনেক বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগরের অভিজাত এলাকা শাহজালাল উপশহর প্রায় পুরোটাই পানির নিচে। অনেকের বাসার নিচতলায় গলা সমান পানি। এছাড়া যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া ও মেজরটিলাসহ মহানগরের অধিকাংশ নিচু এলাকা বন্যা কবলিত।

জেলা প্রশাসন সূত্র জনায়, আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত সিলেট মহানগর ও জেলায় প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে মহানগরে ১৫টি এলাকার ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এ ছাড়া মহানগর ও জেলার ১৪টি উপজেলায় ৮৬৪টি গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো। এরই মধ্যে প্লাবিত এলাকাগুলোয় গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক কৃষিজমির ফসল তলিয়ে গেছে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১২২সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ও সারি গোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সব কটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানিয়েছেন, সিলেটে ২৪ ঘন্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত) ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি ৭৬ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী তিন দিন টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এদিকে, ভারতের আইএমডি’র তথ্যমতে গত ২৪ ঘন্টায় চেরাপুঞ্জিতে ৩৯৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে বৃষ্টিপাত কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. ওমর সানি আকন জানিয়েছেন, বন্যায় সিলেট মহানগর ও জেলায় ৮৬৪টি গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। মোট ৬১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্য পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন ৩ হাজার ৯২৪ জন মানুষ।