আজ সোমবার ভোর থেকে সিলেটেজুড়ে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে আবারও নগরের নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো নগর প্লাবিত হলো। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকায়ও বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
এদিকে, বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন মুসল্লিরা। বৃষ্টির দুর্ভোগ নিয়েই ঈদের নামাজ আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। এ ছাড়া নগরের অনেক এলাকা প্লাবিত হওয়ায় কোরবানি দিতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অনেকে জলাবদ্ধতার কারণে কোরবানি দিতে পারছেন না।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বাঙালনিউজকে জানান, আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১৭৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া আজ সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের উপশহর, তেরোরতন, সোনারপাড়া, লামাপাড়া, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা, কেওয়াপাড়া, তালতলা, জামতলা, সোবহানীঘাট, যতরপুর, মাছিমপুর, পাঠানটুলা, দরগামহল্লা, পায়রাসহ শতাধিক এলাকায় বৃষ্টির পানি জমেছে। অনেক এলাকার বাসা ও দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। কোথাও কোথাও হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি ছিল।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ার কারণে বারবার নগর প্লাবিত হচ্ছে। ঈদের দিনও ভারী বৃষ্টিতে নগরের অনেক নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে অনেকে কোরবানিও দিতে পারছেন না।
এদিকে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এসব উপজেলার দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি অনেক রাস্তাঘাটও তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের তথ্যানুযায়ী, জেলার প্রতিটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আজ বিকেল ৬টা পর্যন্ত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর দুটি পয়েন্ট পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর মধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
পানিবন্দি মানুষজন জানান, হঠাৎ সৃষ্ট বন্যায় সিলেটবাসীর ঈদের আনন্দ পানিতে ভেসে গেল। নগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এতে কেউই বাসাবাড়ি থেকে বেরোতে পারছে না। অনেকে কোরবানিও দিতে পারছেন না। মূলত বৃষ্টির বাগড়ায় ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেল।