সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রাহকের কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে রাইজ এসসেট ডেভেলপমেন্ট নামের একটি ভুয়া এনজিও। এতে প্রায় দুই শতাধিক গ্রাহকের মাথায় হাত উঠেছে। খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পৌর শহরের চান্দশিরকাপন এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির ভাড়া কার্যালয়ে জড়ো হন গ্রাহকেরা।
সেখানে গেলে দেখা যায়, উপজেলা ও পৌর এলাকা থেকে আসা অনেক ভূক্তভোগী লোনের টাকা নিতে অফিসে এসেছেন। তবে অফিসে তালা ঝুলানো। একপর্যায়ে লোন ও তাদের সঞ্চয়ের টাকা নিতে আসা লোকজন অসহায় হয়ে বাড়ি ফিরে যান।
জানা গেছে, ১৫০০ টাকা দিয়ে সদস্য হলেই মিলবে লাখ টাকার উপরে ঋণ, পরিশোধ করতে পারবেন দুই বছরে মাসিক কিস্তিতে। আবার ঋণ নেওয়ার সময় লক্ষ টাকায় সঞ্চয় হিসেবে জমা দিতে হবে আরও ৬ হাজার টাকা। এমন প্রলোভন দিয়ে উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে রাইজ এসসেট ডেভেলপমেন্ট নামের একটি ভুয়া এনজিও।
ভুক্তভোগীরা জানান, মাত্র ৯ দিন পূর্বে পৌর শহরের চান্দশিরকাপন এলাকার আনোয়ার খানের ভাড়াটিয়া ওই বাসা ‘রাইজ এসসেট ডেভেলপমেন্ট’ নামের একটি এনজিও সংস্থা ভাড়া নেয়। তাদের সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে রেজিস্ট্রেশন নং এস ১২৪২/সি ৯২১৮৯/২২/সি ৭৮৪২৪/৫২। শাখা অফিস কোড ১২২। আর তাদের হেড অফিস হচ্ছে রাজধানীর মতিঝিল সিটি সেন্ট্রাল রাইজ ভবন দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকায়। এই চক্রটি মাত্র ৯ দিনে দুই শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সাধারণ মানুষকে তারা বলেছে প্রায় ৩ মাস ধরে বিশ্বনাথে তাদের কার্যক্রম চলছে।
প্রতারণার শিকার হওয়া উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তবলপুর হুছনা বেগম খোলা কাগজকে জানান, ৬-৭দিন আগে এই চক্রের কয়েকজন সদস্য কেন্দ্র বানাতে তার বাড়িতে যান। এসময় ঋণ গ্রহিতা হিসেবে তিনি সাতজনের একটি গ্রুপও তৈরি করেন। ওই সাতজনের কাছ থেকে প্রথমে ভর্তি ফি হিসেবে পনের’শ টাকা নেয়া হয়। এছাড়াও তাকে ৭ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে সঞ্চয় হিসেবে নগদ আরও ৪০ হাজার টাকা জমা রাখে।কথামতো গত বুধবার ঋণের টাকা আনতে গিয়ে দেখতে পান অফিসে তালা দিয়ে তারা পালিয়েছে। একইভাবে গ্রামের ছায়ারুণ বেগমের ১১ হাজার টাকাও হাতিয়ে নেয় চক্রটি।
পাশের ভবনের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আব্দুল বাতেন বলেন, তার সাতজনের গ্রুপের কাছ থেকে ভর্তি ফি হিসেবে ১৫০০ টাকা করে নিয়েছে চক্রটি। এভাবে গ্রুপ করে বিভিন্ন এলাকা থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে ভূয়া এনজিও নামের ওই প্রতারক চক্র।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার কাছ থেকে শুনলাম। এখন পর্যন্ত কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’