সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সিলেট কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর বিচারক আলমগীর হোসেন এ আদেশ দেন।
সিলেট জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক জামশেদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের সময় কড়া পুলিশ পাহারায় তাকে আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। তবে আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে ছিলেন না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাবেক বিচারপতি মানিককে আদালতে তোলার সময় অনেকে তার দিকে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করেন। এসময় কয়েকজন হামলার চেষ্টাও চালান। পরে কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে তাকে আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ।
জামশেদ আলম, সাংবাদিকদের বলেন, আসামী এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে কানাইঘাট থানা পুলিশ। আসামী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় দায়ের করা মামলায় এজহারভূক্ত আসামী হওয়ায় আদালত তাকে জেলহাজতে আটক রাখার নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, আসামি সাবেক বিচারপতি হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত জেলকোড অনুসারে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
জমশেদ আরও বলেন, আসামী আদালতকে জানিয়েছেন তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আদালত এই বিষয়টি আমলে নিয়ে জেলকোড অনুযায়ী তাকে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবৈধভাবে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালায়নের সময় সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক করে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। পরে তাকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি। তার বিরুদ্ধে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে যান। এরপর তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও টেলিভিশনের টক শোতে কথা বলতেন। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত এবং পদত্যাগী শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষে সরব ছিলেন। সম্প্রতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় মানিকের নামে নোয়াখালীর আদালতে মামলা হয়েছে। একই অভিযোগে গত ২২ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে আইনজীবী মো. জিয়াউল হক বাদী হয়ে আরেকটি মামলার আবেদন করেন। আদালত অভিযোগটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে উপস্থাপিকার সঙ্গে অত্যন্ত বাজে আচরণ করে তিনি ব্যাপক আলোচনায় আসেন।