গরমে পানিশূন্যতা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। কারণ এসময় ঘামের কারণে শরীরের প্রয়োজনীয় পানির অনেকটাই বের হয়ে যায়। সেই ঘাটতি পূরণ না হলে দেখা দিতে পারে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। তবে শুধু গরমের কারণেই নয়, ডায়েরিয়া, বমি, জ্বর ইত্যাদি কারণেও দেখা দিতে পারে পানিশূন্যতা। অনেক সময় অতিরিক্ত শরীরচর্চার কারণে দেখা দিতে পারে এই সমস্যা।
শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে পানির পাশাপাশি দেখা দেয় খনিজ পদার্থের ঘাটতিও। তাই এসময় ডাবের পানি, লাচ্ছি, ঘোল ইত্যাদি খাওয়া ভালো। পটাশিয়ামের অভাব পূরণের জন্য নিয়মিত পাকা কলার খাওয়া যেতে পারে। অনেকের বারবার কফি খাওয়ার অভ্যাস। অতিরিক্ত কফি পান করলে তা শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি করে। গরমে কফি, ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন। জেনে নিন ৫টি খাবার সম্পর্কে, যেগুলো শরীরের পানিশূন্যতা রোধে সাহায্য করে-
গরমে স্বস্তি দেবে তরমুজ
গরমে স্বস্তি পেতে খেতে পারেন তরমুজ। এটি শরীরে পানির অভাব পূরণ করে। তরমুজে শতকরা ৯০ ভাগের বেশি পানি থাকে। যে কারণে পানিশূন্যতা রোধে এটি হতে পারে একটি উপকারী খাবার। এই ফলে আছে ফাইবার, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট লাইকোপিন ও ম্যাগনেসিয়াম। যে কারণে এটি তীব্র গরমেও আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। তরমুজ ফ্রিজে রেখেও খেতে পারেন। এটি খাওয়ার পরপরই পানি পান করবেন না।
শসা খাবেন যে কারণে
গরমের সময়ে আরেকটি সেরা খাবার হলো শসা। এটি পানিশূন্যতা রোধ করতে সাহায্য করে। শসায় আছে ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম। শসার প্রায় ৯৫ শতাংশই পানি। সবচেয়ে উপকারী দিক হলো, এতে ক্যালোরি থাকে খুবই কম। এটি ডিটক্স হিসেবেও ভালো কাজ করে। নিয়মিত শসা খেলে দূর হয় শরীরে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ। এটি ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখে।
আমের উপকারিতা
আমকে বলা হয় ফলের রাজা। পুষ্টিগুণে ভরা এই ফল শরীরের জন্য নানাভাবে উপকার বয়ে আনে। আমে প্রচুর ক্যালোরি থাকে। তাই আপনি ক্যালোরি সচেতন হলে খুব বেশি আম না খাওয়াই ভালো। উপকারী এই ফলে আছে ভিটামিন এ এবং সি, ফাইবার, সোডিয়ামসহ ২০টিরও বেশি খনিজ। নিয়মিত আম খেলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এটি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্থুলতা ইত্যাদি সমস্যা প্রতিরোধেও সাহায্য করে। আমের প্রায় ৮৮ শতাংশই পানি। যে কারণে গরমে আম খেলে পানিশূন্যতা দূর হয় অনেকটাই।
লেবু খান প্রতিদিন
এই গরমে লেবুর চেয়ে উপকারী আর কী হতে পারে! ভিটামিন সি যুক্ত এই ফলের রস আপনাকে সারাদিন সতেজ অনুভূতি দেবে। লেবুর শরবত হতে পারে গরমে সবচেয়ে সুস্বাদু পানীয়। তবে শরবতে খুব বেশি চিনি মেশাবেন না। লেবুতে থাকা পটাশিয়াম শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ঘামের কারণে শরীরে খনিজের যে ঘাটতি তৈরি হয় তার অনেকটাই পূরণ করে লেবু। লেবুর প্রায় ৮৮ শতাংশ পানি। এতে আরও আছে ক্যালসিয়াম ও ফাইবার।
টমেটো খান, সুস্থ থাকুন
টমেটো প্রায় সব মৌসুমেই পাওয়া যায়। টমেটো রান্না করে কিংবা কাঁচা খাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন কাঁচা খেলে। টমেটোর সালাদ বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার। টমেটোতে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ২, ভিটামিন সি, ক্রোমিয়াম, ফোলেট, ফাইবার, পটাশিয়াম এবং ফাইটোকেমিক্যাল জাতীয় পুষ্টি। নিয়মিত টমেটো খেলে ক্যান্সার, হৃদরোগ ও অটোইমিউন ডিসঅর্ডারের ঝুঁকি কমে।