সরকারের সীমাহীন নিপীড়ন-নির্যাতনের কারণে দেশের জনগণ এখন কথা বলতে পারে না, ফিসফিস করে চোখের ইশারায় কথা বলে- এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন লিফলেট বিতরণ করতে যাই, অনেকেই আমাদের সঙ্গে হাত মেলান। চোখের ভাষায় বোঝা যায় তাদের সম্মতি আছে আমাদের কর্মসূচিতে। বোঝা যায় তারা আতঙ্কে আছেন। এমনও হয়েছে আমরা যখন লিফলেট বিতরণ করতে যাই, একজন লিফলেট হাতে নিয়ে বলেছেন- এটা প্রকাশ্যে পড়া যাবে না, বাসায় নিয়ে পড়বো।’
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘এদেশে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম হয়েছে, আন্দোলন হয়েছে। স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন হয়েছে, সেই আন্দোলনে আমিও আহত হয়েছি, আমার পেটে গুলি লেগেছিল। সেই গণতন্ত্রের আন্দোলনের চিহ্ন এখনও আমি বয়ে বেড়াচ্ছি। এখনো কেন এই দেশে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে হবে? এখনো কেন মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য কথা বলতে হচ্ছে? এগুলোর জন্য সেলিম, সাজু, দিপালী সাহা, শাজাহান সিরাজ আত্মদান করেছেন! সর্বোপরি ডাক্তার মিলন, জিহাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়েছে। তখন আমি ছাত্র রাজনীতি করতাম। আমি তো দেখছি সেই যুগে যে জুলুম নির্যাতন চলেছে তার চেয়ে আরও নির্মম বর্বর অনাচার, পৈশাচিক এই আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী দুঃশাসন।’
তিনি বলেন, ‘এরশাদ তো প্রতারণা অত্যাচার করে নয় বছর শাসন করেছেন। বর্তমান স্বৈরশাসক- এরাতো মহাপ্রতারণা অত্যাচারের সঙ্গে সরকারি প্রশাসনিক নির্যাতনের খড়গ জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। মিডিয়া ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত বিরোধীদলের ওপর নানান ধরনের কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে।’
বিএনপি ও সমমনা দলের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমরা যে লিফলেট বিতরণ করছি আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো, এই লিফলেট প্রতি ঘরে ঘরে নিয়ে যাবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবার হাতে হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন। এটা শুধু শহরে বা নগরে দিলেই হবে না, এটা থানা পর্যায়ে, ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রতি ঘরে ঘরে নিয়ে যেতে হবে। কারণ, এই কর্মসূচির প্রতি জনগণের সমর্থন রয়েছে। সরকারের অনাচারের বিরুদ্ধে আপনারা যে লিফলেট বিতরণ করছেন, জনগণের ভাষা এই লিফলেটের মধ্যে লিপিবদ্ধ হয়েছে।’
কারাগারের ভেতরেও বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীরা নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অভিযোগ করে রিজভী আরও বলেন, ‘সাবেক যারা এমপি কারাগারে তারা ডিভিশন পান। কিন্তু সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ডিভিশন বাতিল করে সাধারণ কয়েদিদের জায়গায় রাখা হয়েছে।’
এসময় গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের চিত্র তুলে ধরেন রিজভী। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৫ জনের বেশি নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এসময়ে মামলা হয়েছে ৪টি, এসব মামলায় আসামি ৩২৫ জনের বেশি। বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছেন ২০ জন।
সূত্র : জাগো নিউজ