০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন কমিশন শয়তানের অনুচর: রুহুল কবির রিজভী

বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) শয়তানের অনুচর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি কথা বলেন, হাছান মাহমুদের চেয়েও তাকে আরও বেশি আওয়ামী লীগের অনুগত ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর মনে হয়। আজ নির্বাচন ও গণতন্ত্র নিয়ে মানুষের স্বাধীনতা নিয়ে যে শয়তানি চলছে সামগ্রিকভাবে সেই শয়তানের অনুচর মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানকে।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশের বেশিরভাগ জনগণের পক্ষে কাজ করা দল হচ্ছে বিএনপি। যার বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে। অসংখ্য নেতাকর্মী এখন তাদের বাড়িতে থাকতে পারে না। সারাদেশে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি বিরাজমান। বিরাজমান পরিস্থিতির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী বলেন- বিএনপি নাকি সন্ত্রাসী দল। তিনি নাকি কারও ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবেন না।

শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, জনগণের ভাগ্য নিয়ে তো আপনি ছিনিমিনি খেলছেন। আজকে সিপিডি বলেছে, গত ১৫ বছরে শুধু ব্যাংক থেকেই ৯৬ হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। কারা করেছে? আপনারা করেছেন।

তিনি বলেন, তাহলে আওয়ামী লীগ কি সন্ন্যাসী দল? আমাদের দলের প্রধানকে ফ্যাসিবাদের করাল গ্রাসে বন্দি করে রেখেছেন, আমাদের ২৩ থেকে ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে বন্দি করে রেখেছেন। দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটি এবং হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে বন্দি করে রেখেছেন। এর চেয়ে দুঃশাসন আর কী হতে পারে?

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, যারা ছাত্র রাজনীতি করে এসেছে তারা অনেকেই আপনার কাছে তাদের আত্মা বিক্রি করেছে। তাদের সেই মনুষ্যত্ব বিবেক আর নেই। ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদরা জানতাম ছাত্র রাজনীতি করেছেন। ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, তিনি এখন ফ্যাসিবাদের মুখপাত্র হয়েছেন। শুধু আমরা কেন, সারাদেশের জনগণ কেউ আর তাদের পছন্দ করে না।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এরশাদের আমলেও আমরা নির্বাচন বর্জন করেছি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেননি? তখন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিলেন, নির্বাচন পছন্দ হয়নি তাই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। ২২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। মনে হচ্ছে উনি হলেন পবিত্র সন্ন্যাসী, উনি যেটা বলবেন সেটাই মানতে হবে।

রিজভী বলেন, দেশের জনগণ, বুদ্ধিজীবী মহল, এমনকি আন্তর্জাতিক মহল থেকেও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। শুধু উনার (শেখ হাসিনা) একগুয়েমিতে তিনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করছেন না। তিনি জানেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জিতবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি ও সমমানা দল যে আন্দোলন করছে সে আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত। সত্যের স্বপক্ষের আন্দোলন। যারা সত্যের পক্ষে থাকে তাদের ওপরে তো নিপীড়ন নির্যাতন নেমে আসেই। আমাদের সব বাধা অতিক্রম করতে হবে। সরকারের সব রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, নির্বাচন ইস্যুতে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এদেশে এসে খবরদারি করছে। মনে হচ্ছে আমরা উপনিবেশের মধ্যে বসবাস করছি। এটি হতে পারে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে যারা সমর্থন দেবে আমরা তাদের স্বাগত জানাই। আমাদের রাষ্ট্রীয় শক্তি নেই, আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নেই। কিন্তু আমাদের আছে জনগণ।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট ১৮৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার, ৫টি মামলা, ৪৭০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এসময়ে ১০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

সূত্র : ঢাকা পোস্ট

বিষয়

নির্বাচন কমিশন শয়তানের অনুচর: রুহুল কবির রিজভী

প্রকাশিত: ০৫:২০:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩

বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) শয়তানের অনুচর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি কথা বলেন, হাছান মাহমুদের চেয়েও তাকে আরও বেশি আওয়ামী লীগের অনুগত ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর মনে হয়। আজ নির্বাচন ও গণতন্ত্র নিয়ে মানুষের স্বাধীনতা নিয়ে যে শয়তানি চলছে সামগ্রিকভাবে সেই শয়তানের অনুচর মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানকে।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশের বেশিরভাগ জনগণের পক্ষে কাজ করা দল হচ্ছে বিএনপি। যার বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে। অসংখ্য নেতাকর্মী এখন তাদের বাড়িতে থাকতে পারে না। সারাদেশে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি বিরাজমান। বিরাজমান পরিস্থিতির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী বলেন- বিএনপি নাকি সন্ত্রাসী দল। তিনি নাকি কারও ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবেন না।

শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, জনগণের ভাগ্য নিয়ে তো আপনি ছিনিমিনি খেলছেন। আজকে সিপিডি বলেছে, গত ১৫ বছরে শুধু ব্যাংক থেকেই ৯৬ হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। কারা করেছে? আপনারা করেছেন।

তিনি বলেন, তাহলে আওয়ামী লীগ কি সন্ন্যাসী দল? আমাদের দলের প্রধানকে ফ্যাসিবাদের করাল গ্রাসে বন্দি করে রেখেছেন, আমাদের ২৩ থেকে ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে বন্দি করে রেখেছেন। দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটি এবং হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে বন্দি করে রেখেছেন। এর চেয়ে দুঃশাসন আর কী হতে পারে?

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, যারা ছাত্র রাজনীতি করে এসেছে তারা অনেকেই আপনার কাছে তাদের আত্মা বিক্রি করেছে। তাদের সেই মনুষ্যত্ব বিবেক আর নেই। ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদরা জানতাম ছাত্র রাজনীতি করেছেন। ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, তিনি এখন ফ্যাসিবাদের মুখপাত্র হয়েছেন। শুধু আমরা কেন, সারাদেশের জনগণ কেউ আর তাদের পছন্দ করে না।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এরশাদের আমলেও আমরা নির্বাচন বর্জন করেছি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেননি? তখন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিলেন, নির্বাচন পছন্দ হয়নি তাই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। ২২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। মনে হচ্ছে উনি হলেন পবিত্র সন্ন্যাসী, উনি যেটা বলবেন সেটাই মানতে হবে।

রিজভী বলেন, দেশের জনগণ, বুদ্ধিজীবী মহল, এমনকি আন্তর্জাতিক মহল থেকেও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। শুধু উনার (শেখ হাসিনা) একগুয়েমিতে তিনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করছেন না। তিনি জানেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জিতবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি ও সমমানা দল যে আন্দোলন করছে সে আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত। সত্যের স্বপক্ষের আন্দোলন। যারা সত্যের পক্ষে থাকে তাদের ওপরে তো নিপীড়ন নির্যাতন নেমে আসেই। আমাদের সব বাধা অতিক্রম করতে হবে। সরকারের সব রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, নির্বাচন ইস্যুতে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এদেশে এসে খবরদারি করছে। মনে হচ্ছে আমরা উপনিবেশের মধ্যে বসবাস করছি। এটি হতে পারে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে যারা সমর্থন দেবে আমরা তাদের স্বাগত জানাই। আমাদের রাষ্ট্রীয় শক্তি নেই, আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নেই। কিন্তু আমাদের আছে জনগণ।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট ১৮৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার, ৫টি মামলা, ৪৭০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এসময়ে ১০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

সূত্র : ঢাকা পোস্ট