০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের

৪০ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজা উপত্যকায় দ্বিতীয়বারের মতো এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। তবে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। মিসরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল। খবর টাইমস অব ইসরায়েল।

বুধবার হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহর নেতৃত্বে মিসরে যায় হামাসের প্রতিনিধি দল। সেখানে মিসরের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও গাজায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পৌঁছানো নিয়ে আলোচনা করেন তারা। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন ‘আপাতত, এখনও আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত হয়নি কিছু’।

মিশরীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, বুধবার বয়স্ক, নারী ও শিশুসহ যাদের জরুরী চিকিৎসা সেবা প্রয়োজন এমন ৪০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দেয় ইসরায়েল। বিনিময়ে ইসরায়েলও গাজায় এক সপ্তাহের জন্য বিমান ও স্থল অভিযান বন্ধ এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বর্ধিত সাহায্যের অনুমতি দেবে ইসরায়েল।

তবে হামাস নেতারা প্রকাশ্যে বলেছেন, তারা শুধুমাত্র একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে জিম্মিদের মুক্ত করবে। এছাড়া তারা দাবি করেছেন, ইসরায়েল যদি সমস্ত ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেয় তারাও বাকি সমস্ত জিম্মিদের (আনুমানিক ১০০ জন) মুক্তি দেবে।

এদিকে হামাসের পলিটব্যুরোর সদস্য গাজী হামাদ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে জানান, তারা এবার আর কোনো অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন না। তার দাবি, অস্থায়ী বিরতির মাধ্যমে জিম্মিদের ছাড়িয়ে নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় আবারও গণহত্যা চালানো শুরু করবে।

তিনি আরও বলেছেন, ‘কিছু মানুষ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও অস্থায়ীভাবে কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহের জন্য লড়াই বন্ধের কথা ভাবছে। কিন্তু এটি হামাস ও ফিলিস্তিনিদের স্বার্থের সঙ্গে যায় না।’

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ১৯ হাজার ৬৬৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি নারীও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন ৫২ হাজার ৫৮৬ জন।

ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

মাঝে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে ৮৪ ইসরায়েলি এবং ২৪ বিদেশিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৭১ জন মহিলা এবং ১৬৯ জন শিশু রয়েছে।

যুদ্ধবিরতি শেষে গত ১ ডিসেম্বর থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় সংঘাতে জড়ায় ইসরায়েল ও হামাস।

অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। এরমধ্যে বন্দিবিনিময়ে ১০৫ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের কাছে এখনো প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র : ঢাকা টাইমস

বিষয়

এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের

প্রকাশিত: ১০:৪৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩

৪০ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজা উপত্যকায় দ্বিতীয়বারের মতো এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। তবে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। মিসরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল। খবর টাইমস অব ইসরায়েল।

বুধবার হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহর নেতৃত্বে মিসরে যায় হামাসের প্রতিনিধি দল। সেখানে মিসরের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও গাজায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পৌঁছানো নিয়ে আলোচনা করেন তারা। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন ‘আপাতত, এখনও আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত হয়নি কিছু’।

মিশরীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, বুধবার বয়স্ক, নারী ও শিশুসহ যাদের জরুরী চিকিৎসা সেবা প্রয়োজন এমন ৪০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দেয় ইসরায়েল। বিনিময়ে ইসরায়েলও গাজায় এক সপ্তাহের জন্য বিমান ও স্থল অভিযান বন্ধ এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বর্ধিত সাহায্যের অনুমতি দেবে ইসরায়েল।

তবে হামাস নেতারা প্রকাশ্যে বলেছেন, তারা শুধুমাত্র একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে জিম্মিদের মুক্ত করবে। এছাড়া তারা দাবি করেছেন, ইসরায়েল যদি সমস্ত ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেয় তারাও বাকি সমস্ত জিম্মিদের (আনুমানিক ১০০ জন) মুক্তি দেবে।

এদিকে হামাসের পলিটব্যুরোর সদস্য গাজী হামাদ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে জানান, তারা এবার আর কোনো অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন না। তার দাবি, অস্থায়ী বিরতির মাধ্যমে জিম্মিদের ছাড়িয়ে নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় আবারও গণহত্যা চালানো শুরু করবে।

তিনি আরও বলেছেন, ‘কিছু মানুষ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও অস্থায়ীভাবে কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহের জন্য লড়াই বন্ধের কথা ভাবছে। কিন্তু এটি হামাস ও ফিলিস্তিনিদের স্বার্থের সঙ্গে যায় না।’

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ১৯ হাজার ৬৬৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি নারীও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন ৫২ হাজার ৫৮৬ জন।

ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

মাঝে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে ৮৪ ইসরায়েলি এবং ২৪ বিদেশিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৭১ জন মহিলা এবং ১৬৯ জন শিশু রয়েছে।

যুদ্ধবিরতি শেষে গত ১ ডিসেম্বর থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় সংঘাতে জড়ায় ইসরায়েল ও হামাস।

অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। এরমধ্যে বন্দিবিনিময়ে ১০৫ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের কাছে এখনো প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র : ঢাকা টাইমস