০৩:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জি-২০ সম্মেলন কী, যা থাকছে এবারের আলোচনায়

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী জি–২০ সম্মেলন। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও শক্তিধর দেশের নেতারা অংশ নেবেন এই সম্মেলনে। ভারতে প্রথমবারের মতো জি–২০ সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে।

সম্মেলন উপলক্ষে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে নয়াদিল্লিকে। নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাঠে নামানো হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য। নিরাপত্তার খাতিরে রয়েছে ড্রোন–বিরোধী ব্যবস্থা। দিল্লির বানরের দলগুলোকে ঠেকাতেও নেওয়া হয়েছে অভিনব সব কৌশল।

জি–২০ কী
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে গভীর অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিল এশিয়ার অনেক দেশ। এ সংকট শেষে ১৯৯৯ সালে বিশ্বের বড় ২০টি দেশ একটি অর্থনৈতিক জোট গড়ে। তারা বুঝতে পেরেছিল, এমন সংকট কোনো একটি দেশের সীমানার মধ্যেই আবদ্ধ থাকে না। তাই এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে আরও অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রয়োজন। ওই জোটই জি–২০।

জি–২০ জোটের বর্তমান সদস্য আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮০ শতাংশই এই জোটের দখলে। আর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশের সঙ্গে জড়িত জি–২০ দেশগুলো।

জি–২০ গঠনের শুরুর বছরগুলোতে শুধু সদস্য দেশগুলোর অর্থ বিভাগের প্রধানেরাই সম্মেলনে যোগ দিতেন। তবে ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক সংকটের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রতিবছর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জোটের সদস্যদেশগুলোর নেতারা অংশ নেবেন।

এবারের সম্মেলনে মূল বিষয়গুলো
জি–২০–এর এবারের সম্মেলনের সভাপতিত্ব করছে ভারত। এ সম্মেলনে আলোচনার বিষয়বস্তুগুলো হলো বহুপক্ষীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আরও ঋণের ব্যবস্থা করা, আন্তর্জাতিক ঋণকাঠামোর সংস্কার, ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে নীতিমালা তৈরি এবং খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাব।

তবে এ নিয়ে এখনো কোনো যৌথ বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে জোটের দেশগুলো। কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধে নিজেদের অবস্থানের কারণে তাদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর জন্য মস্কোকে দায়ী করতে নারাজ রাশিয়া ও চীন। অপরদিকে যুদ্ধের জন্য মস্কোর প্রতি কড়া নিন্দা জানানোকে যৌথ বিবৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও কানাডা।

সম্মেলনের প্রতিপাদ্য
ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের জি–২০ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘ভাসুধাইভা কুতুমবাকাম’। সংস্কৃত এই শব্দ দুটির অর্থ ‘পুরো বিশ্ব একটি পরিবার’। চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর ব্রাজিলের কাছে জি–২০–এর সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে ভারত। সে অনুযায়ী পরের বছরের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ব্রাজিলে।

বিষয়

জি-২০ সম্মেলন কী, যা থাকছে এবারের আলোচনায়

প্রকাশিত: ০৬:৩১:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী জি–২০ সম্মেলন। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও শক্তিধর দেশের নেতারা অংশ নেবেন এই সম্মেলনে। ভারতে প্রথমবারের মতো জি–২০ সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে।

সম্মেলন উপলক্ষে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে নয়াদিল্লিকে। নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাঠে নামানো হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য। নিরাপত্তার খাতিরে রয়েছে ড্রোন–বিরোধী ব্যবস্থা। দিল্লির বানরের দলগুলোকে ঠেকাতেও নেওয়া হয়েছে অভিনব সব কৌশল।

জি–২০ কী
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে গভীর অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিল এশিয়ার অনেক দেশ। এ সংকট শেষে ১৯৯৯ সালে বিশ্বের বড় ২০টি দেশ একটি অর্থনৈতিক জোট গড়ে। তারা বুঝতে পেরেছিল, এমন সংকট কোনো একটি দেশের সীমানার মধ্যেই আবদ্ধ থাকে না। তাই এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে আরও অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রয়োজন। ওই জোটই জি–২০।

জি–২০ জোটের বর্তমান সদস্য আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮০ শতাংশই এই জোটের দখলে। আর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশের সঙ্গে জড়িত জি–২০ দেশগুলো।

জি–২০ গঠনের শুরুর বছরগুলোতে শুধু সদস্য দেশগুলোর অর্থ বিভাগের প্রধানেরাই সম্মেলনে যোগ দিতেন। তবে ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক সংকটের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রতিবছর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জোটের সদস্যদেশগুলোর নেতারা অংশ নেবেন।

এবারের সম্মেলনে মূল বিষয়গুলো
জি–২০–এর এবারের সম্মেলনের সভাপতিত্ব করছে ভারত। এ সম্মেলনে আলোচনার বিষয়বস্তুগুলো হলো বহুপক্ষীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আরও ঋণের ব্যবস্থা করা, আন্তর্জাতিক ঋণকাঠামোর সংস্কার, ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে নীতিমালা তৈরি এবং খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাব।

তবে এ নিয়ে এখনো কোনো যৌথ বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে জোটের দেশগুলো। কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধে নিজেদের অবস্থানের কারণে তাদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর জন্য মস্কোকে দায়ী করতে নারাজ রাশিয়া ও চীন। অপরদিকে যুদ্ধের জন্য মস্কোর প্রতি কড়া নিন্দা জানানোকে যৌথ বিবৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও কানাডা।

সম্মেলনের প্রতিপাদ্য
ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের জি–২০ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘ভাসুধাইভা কুতুমবাকাম’। সংস্কৃত এই শব্দ দুটির অর্থ ‘পুরো বিশ্ব একটি পরিবার’। চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর ব্রাজিলের কাছে জি–২০–এর সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে ভারত। সে অনুযায়ী পরের বছরের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ব্রাজিলে।