বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্ব অনেকটাই কেটে গেছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের ওপর নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসার সম্ভাবনা নেই বলেও মনে করছেন প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, মানবাধিকার ও নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্ব অনেকটাই কেটে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ওয়াদা করেছিল বাংলাদেশে এমন কিছু করবে না, যা একটি দলের পক্ষে যায় বা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়। তারা কথা রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেবে না দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের ওপর নতুন করে কোনো বিধিনিষেধ বা নিষেধাজ্ঞা আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বেড়েছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার পর থেকে প্রতিটি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হয়েছে এবং ওয়াশিংটনকে তা জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের থেকে নেওয়া পদক্ষেপগুলোও তাদের জানানো হয়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা তো দূরের কথা, র্যাবের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, আমরা প্রত্যাশা করি এটি উঠে যাবে। বাংলাদেশ এ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়াতে রয়েছে।
বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। দুই দেশের পারস্পারিক নির্ভরশীলতা রয়েছে। ব্যবসা কারও দয়ায় চলে না। বাংলাদেশ প্রতিযোগী বাজার গড়ে তুলেছে। এছাড়া বাণিজ্যিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে টিকফা বৈঠকের বাইরেও আরও বৈঠক করা হচ্ছে। বৈঠকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, দেশটির অভ্যন্তরীণ নীতিতে শ্রম লবির বড় প্রভাব রয়েছে।
তিনি বলেন, কেন যুক্তরাষ্ট্র শ্রম বিষয়ে কথা বলছে বা শ্রম নীতি নিয়েছে তা বোঝা যায়। বাংলাদেশও শ্রম বিষয়ে একই মানদণ্ড চায়। ২০২৫ সালের মধ্যে শ্রম বিষয়ে সব উদ্বেগ দূর করবে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের লবির মতো টেক্সটাইল লবিও বেশি প্রভাবশালী। আর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের তুলার অন্যমত বড় ক্রেতা। এখানেও পারস্পারিক নির্ভরশীলতা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানপোড়েন নিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ও কাজ করার সুযোগ বেড়েছে। অতীতে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল, ভবিষ্যৎ বলে দেবে কিছু ভুল বোঝাবুঝি রয়ে গেছে কি না। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে অনেক কিছু বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, আগে যে চেষ্টা করানো হয়নি। করোনার সময়ে যোগাযোগের অভাবে কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হতে পারে।
তিনি বলেন, তবে যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অতীতে সিদ্ধান্তগুলো যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে, সে রাস্তাগুলো আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। ফলে সেই প্রভাব কমে গিয়েছে।
বিএনপির নির্বাচনরে না থাকায় আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে কি না— জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না আসা কোনোভাবেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারবে না। বিএনপি নিজ থেকে নির্বাচনে আসবে না। জামায়েতের নিবন্ধন নেই। ফলে বাকি যে রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, তাদের নিয়েই বাংলাদেশে…।
খবর: ঢাকাপোস্ট