সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জে ডাকাতির অভিযোগ দায়েরের পরও তা রেকর্ড না করা এবং প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের পরিবর্তে পুলিশের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আয়নুল হক। তিনি পীরনগর গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৩ এপ্রিল দিবাগত গভীর রাতে পূর্ব জামডহর গ্রামের তার মোদি দোকানে হামলা চালায় একদল ডাকাত। তারা তার মুখ ও হাতপা বেঁধে ফেলে এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার উপর চড়াও হয়। এসময় তিনি তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করলে তারা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপ দেয় ও কিলঘুষি মেরে মারাত্মক আহত করে। তারা তার ক্যাশ বাক্স লুট করে নগদ ৫২ হাজার টাকা ও লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। পরে আলতাফ হোসেন নামক এক ব্যক্তি দোকানে ডাকাতদের দেখে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকলে গ্রামবাসী ছুটে আসেন এবং ট্রিপল নাইনে কল দিলে পুলিশও ঘটনাস্থলে উপস্থিথ হয়। এরমধ্যে অবশ্য ডাকাতদলও পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, ডাকাত দলে কয়েকজন সদস্য থাকলেও তিনি পীরনগর গ্রামের কদরিছ আলীর দুই ছেলে পাবেল আহমদ ও বাবুল আহমদ এবং মাখন মিয়ার ছেলে নাহিদ ইসলামকে সনাক্ত করতে সক্ষম হন। তারা তিনজনই আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য হিসাবে এলাকায় কুখ্যাত। এ ব্যাপারে ৪ এপ্রিল জকিগঞ্জ থানায় ডাকাতির অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ এখনো মামলা রেকর্ড করেনি বা কোনো আইনী পদক্ষেপও নেয়নি। যোগাযোগ করলে তারা কখনো ‘দেখছি’ কখনোবা মামলাটি যৌথ বাহিনী দেখছে বলে জবাব দেন ওসি জহিরুল হক। এই সুযোগে পাবেল, বাবুল ও নাহিদ এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে এবং আয়নুল হক ও তার সাথে সংশ্লিষ্টদের হুমকি ধমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। থানার এসআই সুমনের সাথে পাবেলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বলেও মনে করছেন তারা। তাই তিনি সিলেটের পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। দ্রুত তার মামলা রেকর্ড করে আসামিদের গ্রেফতারের মাধ্যমে এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহ্ববান জানান তিনি।
এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, পাবেল চিন্থিত সন্ত্রাসী। তার বাপ-দাদারাও একসময় ডাকাতির সাথে জড়িত ছিলো। এছাড়াও আসামি পাবেল আহমদ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসী।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পাবেলের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল হক মুন্না অভিযোগ রেকর্ড না করার প্রসঙ্গ বারবার এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি জানান, একটি জিডি দায়ের করা হয়েছে।